দেশের জন্য প্রাণ বিসর্জন করা যে আশু আবশ্যক, এ সম্বন্ধে আমার সন্দেহ ছিল না।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গল্পগুচ্ছ’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘একরাত্রি’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : কলকাতা গমনের পর নায়কের মনে দেশ ভাবনার যে চিন্তা তা আলোচ্য অংশে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে।
বিশ্লেষণ : কালেক্টারের নাজির অথবা আদালতের হেডক্লার্ক হওয়ার বাসনায় নায়ক পালিয়ে আসে কলকাতায়। কলকাতায় এসে প্রথম প্রথম অসুবিধায় পড়লেও পরে পিতার আর্থিক সুবিধায় সে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে লাগলো। এ সময়ে শহরে রাজনৈতিক নেতাদের ভাষণ শুনে তার জীবনের পরিকল্পনা বদলে যায়। সে নিয়মিত মিটিং মিছিল, সভাসমিতিতে যোগ দিতে থাকে। দেশের জন্য কিছু একটা করতে পারা তার কাছে সবচেয়ে জরুরি বলে মনে হলো। লেখাপড়ার চেয়ে পরাধীন ভারতের সেবা করা তার কাছে আশুকর্তব্য হিসেবে প্রতিপন্ন হলো। এজন্য সে এ কাজে কোমর বেঁধে লেগে গেল। কলকাতার ইঁচড়ে পাকা ছেলেদের মতো তার দেশপ্রেম ঠুনকো ছিল না। প্রকৃত দেশপ্রেমিক হওয়ার জন্য সে নিজের প্রাণবিসর্জন দেওয়া আশুকর্তব্য বলে মনে করলো। প্রাণবিসর্জন দেওয়ার নির্দিষ্ট কোন নিয়ম জানা না থাকলেও সে উৎসাহের সাথে প্রাণবিসর্জনের পথটি খুঁজতে থাকল। কড়া রোদ মাথায় নিয়ে চাঁদা আদায়, দলপতির বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে মারামারি করা এভাবেই তার দেশোদ্ধারের কাজ চলতে থাকল ।
মন্তব্য : দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা থেকেই নায়কের মনে এমন চিন্তাভাবনার উদ্রেক হয়েছিল।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%8f%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%bf-%e0%a6%97%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%aa-%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a7%80%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a8/