উত্তর : ভূমিকা ঃ তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার দারিদ্র্য, বেকারত্ব, অসহায়, শিশু, ছিন্নমূল নারী ও পঙ্গু, দৈহিক দিক থেকে অক্ষম জনগোষ্ঠীর তথা সমাজের পশ্চাৎপদ অংশের কল্যাণের প্রতি গুরুত্বারোপ করে সার্বিক প্রক্রিয়ার সম্পূরক হিসেবে সমাজকল্যাণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
→ তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো নিম্নরূপ ঃ
১. গ্রামীণ দরিদ্র জনগণের জন্য উৎপাদনমুখী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা এবং উৎপাদন ও উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
জাগ ২. গ্রামীণ জনগণের আয় ও জীবনমান বৃদ্ধির মাধ্যমে জনসংখ্যা রোধে ব্যবস্থা করা।
৩. গ্রাম উন্নয়নমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের বৃত্তিমূলক, ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায়িক দিকের উন্নয়ন সাধন।
৪. সামাজিক, অর্থনৈতিক, শারীরিকভাবে পঙ্গু ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত জনগণ আত্মনির্ভর জনসম্পদে রূপান্তর করতে প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসূচি জোরদার করা।
৫. সমাজের দুঃস্থ, অসহায়, অক্ষম ও বৃদ্ধদের যৌথ পরিবার প্রথার মাধ্যমে নিরাপত্তা প্রদানে এবং তাদের দায়িত্ব গ্রহণে সামাজিক ধর্মীয় মূল্যবোধের সাহায্যে জনগণকে উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করা।
৬. অনাথ ও এতিমদের সুষ্ঠু বিকাশ ও পারিবারিক পরিবেশে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এতিমখানা ও শিশুসদনগুলোর সংস্কার সাধন ও অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা।
৭. দক্ষ সমাজকর্মী সৃষ্টির জন্য জাতীয় সমাজসেবা একাডেমীর উন্নয়ন সাধন করা।
৮. পরিবার কেন্দ্রিক কর্মসূচি গ্রহণ করে শারীরিক প্রতিবন্ধী ও বয়স্কদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
→ তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার গৃহীত সমাজকল্যাণ কর্মসূচিগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো ঃ
১. গ্রামীণ দরিদ্র জনগণের উৎপাদন ও উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে আয় ও জীবনমান উন্নয়নে এই পরিকল্পনায় গ্রামীণ সমষ্টি উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় এবং এই খাতে ৩১.৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ
রাখা হয়।
২. এতিম ও অনাথ শিশুদের সুষ্ঠু ও যথাযথ মনস্তাত্ত্বিক, আবেগজনিত ও সামাজিক বিকাশ সাধনের জন্য এই পরিকল্পনা মেয়াদে ৭৩টি শিশু সদনকে প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধনের মাধ্যমে শিশু পরিবার নামকরণ করা হয় এবং এই উদ্দেশ্যে ১৬.১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়।
৩. দৈহিক ও মানসিক বিকলাঙ্গদের কল্যাণ ও পুনর্বাসনের জন্য ঢাকায় ph (Physical Handicaped) কেন্দ্রের সংস্কার সাধন ও এর সাথে নতুন একটি কমপ্লেক্স স্থাপন করা হয় এবং এই খাতে ব্যয় বরাদ্দ করা হয়। তা
৪. ভিক্ষুক ও ভবঘুরেদের জন্য প্রতিষ্ঠিত ৬টি কেন্দ্রের আবাসিক ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
৫. স্বেচ্ছামূলক সমাজকল্যাণ সংগঠনকে সহযোগিতা ও উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে অনুদান কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ বহুমুখী সমিতিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয় এবং এই সমিতিকে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ৫.২০ কোটি টাকা।
৬. এই পরিকল্পনা মেয়াদে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও দক্ষ সমাজকর্মী সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশে যাবতীয় সমাজকল্যাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা।
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা মেয়াদে গৃহীত কার্যক্রমসমূহ বাস্তবায়নের জন্য ৭৫০.০০ মিলিয়ন টাকা বরাদ্দ ৮০% তবে এ পরিকল্পনার সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো এটাতে সমাজকল্যাণের নতুন কোন ক্ষেত্রে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি বরং প্রচলিত কর্মসূচির মধ্য থেকে বিশেষ কয়েকটির উপর জোর দেয়া হয়েছে মাত্র।