তবু মোটের উপর এ বীরহৃদয় সন্ন্যাসী সত্যকার স্বদেশপ্রেমিক ছিলেন মানবপ্রেমিকও ছিলেন।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : আলোচ্য অংশটুকু সুপ্রাবন্ধিক কাজী আবদুল ওদুদ বিরচিত ‘বাংলার জাগরণ’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে উৎকলিত হয়েছে।
প্রসঙ্গ : স্বামী বিবেকানন্দের ধর্মের প্রতি গভীর অনুরাগ এবং স্বদেশপ্রেমের পরিচয় তুলে ধরে প্রবন্ধকার উক্ত মন্তব্যটি করেছেন।
বিশ্লেষণ : জাতির সর্বাঙ্গীন কল্যাণ সাধনায় রামমোহন যে কর্মযজ্ঞের সূচনা করেছিলেন শেষ পর্যন্ত তাঁর পশ্চাদবর্তীরা তা ধরে রাখতে পারেননি। সাহিত্যের ক্ষেত্রে আমরা লক্ষ করি মধুসূদন যে উদার নৈতিক মানসিকতা নিয়ে সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র তা শেষপর্যন্ত পারেননি। বরং ধর্মের ক্ষেত্রে যে মধ্যযুগীয় ভাবোন্মত্ততা ছিল সাহিত্য তাকে ঘিরেই প্রদক্ষিণ করেছে। এভাবে বাঙালির জাতীয় চরিত্র ও কর্মধারা একটা সুদর্শন বৈশিষ্ট্য অর্জন করেনি। তবে একটা উদার ও বীর্যবন্ত জাতীয়তার দিকে চোখ রেখে প্রথম এগিয়ে এসেছেন দুইজন কর্মবীর একজন বিবেকানন্দ অপর জন রবীন্দ্রনাথ। বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রিয় শিষ্য ছিলেন। রামকৃষ্ণ জোর দিয়েছিলেন জগৎ হিতের উপর। বিবেকানন্দ ছোটখাটো একজন সংস্কারকের ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ব্রাহ্মদের নিন্দা করেছেন তাদের ঐতিহাসিক বোধ নেই বলে। এভাবেই তিনি নিজেকে প্রকাশ করেছেন। তবু মোটের উপর এই বীরহৃদয় সন্ন্যাসী সত্যিকার স্বদেশপ্রেমিক ও মানবপ্রেমিক ছিলেন। কেননা সেবাশ্রম প্রভৃতি সূচনা করে জাতীয় জীবনে তিনি যে বৃহত্তম কর্মক্ষেত্র রচনা করেছেন জাতির চিত্তপ্রসারের জন্য বাস্তবিকই তা অমূল্য; এবং জাতীয় জীবনের দৈন্যের জন্য নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি সত্ত্বেও এ সব প্রতিষ্ঠান বাংলার হিন্দু যুবককে দেশের সত্যিকার সন্তান হতে অনেকখানি সাহায্য করেছে।
মন্তব্য : হিন্দুধর্মকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরায় এবং মানবসেবায় বিবেকানন্দের নাম চিরস্মরণীয় হয়ে আছে এবং থাকবে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a6%b0%e0%a6%a3-%e0%a6%aa%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a7%80-%e0%a6%86/