অথবা, তত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রে কী কী কার্যাবলি সম্পাদন করতে হয় আলোচনা কর।
অথবা, তত্ত্বাবধানের কার্যাবলি বর্ণনা কর।
অথবা, তত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রে কী কী কার্যাবলি সম্পাদন করতে হয় তা বিশ্লেষণ কর।
উত্তরা।৷ ভূমিকা : একটি প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের সমন্বয় সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে তত্ত্বাবধান । তত্ত্বাবধান ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠানের কাজই সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পারে না। মাঠকর্ম অনুশীলনেও তত্ত্বাবধানের প্রয়োজন হয়।
তত্ত্বাবধানের কার্যাবলি : নিম্নে তত্ত্বাবধানের কার্যাবলিগুলো আলোচনা করা হলো :
১. পর্যবেক্ষণ : প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠু নিয়মনীতি অনুযায়ী চলছে কি না, কর্মীরা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করা তত্ত্বাবধানের একটি কাজ।
২. সাহায্য-সহায়তা করা : প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলি সুচারুরূপে সম্পাদনের জন্য কাঠামোভিত্তিক দায়িত্ব বণ্টন করে দেয়া হয়।এ বিবিধ কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত কর্মীদলকে প্রশাসনিক জ্ঞান ও দক্ষতা উন্নয়নে তত্ত্বাবধান সহায়তা করে।
৩. পরিকল্পনা : তত্ত্বাবধানের একটি অপরিহার্য কাজ হচ্ছে পরিকল্পনা। তত্ত্বাবধানের উদ্দেশ্য নির্ধারণ, নীতি প্রণয়ন ও সঠিক সময়ে তা পালনের জন্য একজন তত্ত্বাবধায়ককে পরিকল্পিত উপায়ে অগ্রসর হতে হয়।
৪. আত:সম্পর্ক উন্নয়ন : কর্মী ও কর্মের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কর্মোদ্দীপনা গতিশীল ও সচল রাখতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে তত্ত্বাবধায়ক ।
৫. সিদ্ধান্ত গ্রহণ : কর্মীরা সবসময় দ্রুত ও কার্যকরী সিদ্ধান্ত আশা করে এবং তারা চায় যে, তাদের মতামত সাপেক্ষে অংশগ্রহণের ভিত্তিতে কোন সিদ্ধান্ত গৃহীত হোক। এক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ন কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নে ও প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় কর্মকাণ্ড তদারকে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে।
৬. সর্বোত্তম সেবা লাভ : কর্মীর ক্ষমতা অনুযায়ী তাদের থেকে সর্বোত্তম সেবা লাভ নিশ্চিত করতে সহায়তা করা তত্ত্বাবধানের একটি কাজ।
৭. প্রশমন : প্রতিষ্ঠানের কর্তব্য পালনে দলীয় সদস্যদের মাঝে আন্তঃদলীয় কোন্দল, দ্বন্দ্ব, ক্রোধ বিরাজ করতে পারে। এসব প্রশমিত করতেও তত্ত্বাবধায়ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ।
৮. কর্মীদের শিক্ষিত করা : প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের প্রয়োজনীয়ভাবে শিক্ষিত করা, যাতে তার জ্ঞান, দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এজেন্সির লক্ষ্যার্জনে তারা সক্ষমকারী হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এবং ভবিষ্যতে তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকা পালন করতে পারে। এজন্য কাজ করা তত্ত্বাবধায়কের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
৯. মূল্যায়ন : মূল্যায়ন কর্মসূচি ও কর্মীর উভয়েরই হতে পারে। কর্মসূচির সাথে সাথে কর্মীদের ক্ষমতা ও দুর্বলতা মূল্যায়ন এবং দায়িত্ব ও কার্যাবলি যাচাই করাও তত্ত্বাবধানের গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
১০. কাজের ধারা বজায় রাখা এবং উন্নয়ন : তত্ত্বাবধান একটি চলমান প্রক্রিয়া।এর উপর এজেন্সির সাফল্য অনেকাংশে নির্ভরশীল।সুতরাং, এজেন্সির সদস্যদের কাজের ধারা বজায় রাখতে ও উত্তরোত্তর বৃদ্ধিকল্পে অবদান রাখে তত্ত্বাবধান।
১১. শিক্ষণ প্রক্রিয়া : তত্ত্বাবধানকে বলা হয় শিক্ষণ প্রক্রিয়া। এজেন্সিতে কর্মী নিযুক্ত থেকে সফলকাম হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে এ প্রক্রিয়া বলবৎ থাকে।
১২. ভুলত্রুটি খুঁজে বের করা: কাজের সফল পরিণতিতে যাবতীয় কর্মপরিকল্পনা ও কর্মপদ্ধতি তদারকি করা এবং যাবতীয় ভুলত্রুটি খুঁজে বের করা তত্ত্বাবধায়কের কাজ। তাছাড়া ভুলত্রুটি শুদ্ধ করে নতুন কর্মপরিকল্পনা ও কর্মপদ্ধতি উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করে তত্ত্বাবধান।
উপসংহার : ভত্ত্বাবধায়কের কাজ হলো
সঠিক তত্ত্বাবধান। তিনি বিভিন্ন কাজ বিভিন্নভাবে তত্ত্বাবধান করে থাকেন।তার সুষ্ঠু ভূমিকার উপর কোন কাজের সফলতা-বিফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে ।