অথবা, চলচ্চিত্রে নারীকে কীভাবে উপস্থাপন করা হয়?
অথবা, চলচ্চিত্রে নারীর উপস্থাপন বর্ণনা কর।
অথবা, চলচ্চিত্রে নারীর অবস্থান তুলে ধর।
অথবা, চলচ্চিত্রে নারীর অবস্থান বিশ্লেষণ কর।
অথবা, চলচ্চিত্রে নারীর অবস্থান ব্যাখ্যা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : অন্য শিল্প মাধ্যমগুলোর তুলনায় চলচ্চিত্রে নারীর উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি। অবশ্য একে উপস্থিতি না বলে উপস্থাপিত বলাই সঙ্গত। চলচ্চিত্রে নারী ভোগের উপাদান পুরুষতান্ত্রিক এ পৃথিবীতে নারী যেমন রাজনীতি, শিক্ষা কিংবা অর্থনীতির কেন্দ্রভাগে নেই, তেমনি নেই চলচ্চিত্রেও। চলচ্চিত্রে নারী পুরুষের চোখে দেখা অপর লিঙ্গমাত্র, পুরুষের জন্য নারী কি অর্থ বহন করে তাই মূলত চলচ্চিত্রে উপস্থাপিত হয়। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নারীকে সাধারণত যেভাবে তুলে ধরা হয় তা আলোচনা করা হলো :
১. নিষ্ক্রিয় : চলচ্চিত্রে পুরুষ চরিত্র সবসময় সক্রিয় এবং ক্ষমতাবান থাকে যাকে কেন্দ্র করে সকল নাটকীয় ঘটনা উন্মোচিত হয় । অন্যদিকে, নারী চরিত্র সবসময় নিষ্ক্রিয় ও ক্ষমতাহীন, পুরুষ চরিত্রগুলোর কামনার বস্তু মাত্র।
২. যৌন উদ্দীপক : চলচ্চিত্রে নারীকে শুধু নিষ্ক্রিয় ও নিখুঁত সৌন্দর্যের আধার হিসেবেই পুনঃনির্মাণ করে না। যৌন উদ্দীগক উপাদান হিসেবেও উপস্থাপন করে। নারীকে এমন সব পোশাক পরানো হয় এবং এমনভাবে ভঙ্গি করতে বাধ্য করা হয় যা যৌন আবেদন সৃষ্টি করে।
৩. প্রেমিকা : চলচ্চিত্রের পর্দায় নারীর প্রেমিকা রূপটিকে প্রাধান্য দেয়া হয়। এ প্রেমিক। নায়িকার কাজ হলো যে কোনোভাবে নায়ককে প্রেমের ফাঁদে ফেলা এবং তার মনযোগ আকর্ষণ করা। তারপর নায়কের সাথে নাচগান
করা এবং প্রতি মিনিটে পোশাক বদলানো। নায়ক নায়িকা উভয়ই পোশাক বদলায় তবে নায়িকার পোশাক বদলানোই ফোকাস করা হয়।
৪. পেশাহীন : অধিকাংশ চলচ্চিত্রে নারীদের কোনো পেশা দেখানো হয় না। নারীদের অংশগ্রহণ থাকে যা বোন এবং প্রেমিকা হিসেবে। তবে দু’একটি সিনেমায় নায়িকাকে উকিল কিংবা পুলিশের ভূমিকায় দেখা যায়। তবে এর সংখ্যা খুবই কম।
উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি, বাংলাদেশে চলচ্চিত্রে নারীর যে হীন অবস্থান তা নারী সমাজকে আরো পিছনে ফেলে দিয়েছে। তাই নারী পুরুষ সমতা আনয়নে চলচ্চিত্রে নারীর সুন্দর উপস্থাপন দরকার।