গ্রাম সরকার ব্যবস্থা সফল করার শর্তাবলি কী কী?

গ্রাম সরকার ব্যবস্থা সফল করার শর্তাবলি কী কী?
অথবা, গ্রাম সরকার ব্যবস্থা সফল করার পূর্বশর্তগুলো কী কী?
অথবা, গ্রাম সরকার ব্যবস্থা সফলের শর্তাবলি সংক্ষেপে উল্লেখ ক
অথবা, গ্রাম সরকার ব্যবস্থা সফল করার পূর্বশর্তগুলো আলোচনা কর।
উত্তরঃ ভূমিকা : কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে এককভাবে দেশের যাবতীয় কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করা সম্ভব। ভিত্তিতে বিভাগ করা হয়। এসব এলাকাভিত্তিক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোই হলো স্থানীয় সরকার। স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে নয়। তাই এর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাজের চাপ লাঘবের জন্য দেশের সমগ্র ভূভাগকে বোতন্ন এলাকা
নিম্নস্তরের ইউনিট হচ্ছে গ্রাম সরকার। গ্রাম সরকার ইউনিয়ন পরিষদের সহায়ক সংগঠন হিসেবেও কাজ করার কথা। গ্রাম বাংলার আর্থসামাজিক উন্নয়নে গ্রাম সরকারের ভূমিকা বা কাজের পরিধি ব্যাপক। গ্রাম সরকার ব্যবস্থা সফল করার শর্তাবলি : গ্রাম সরকার ব্যবস্থাকে সফল করে দেশের মানুষের ভাগ্য বৃদ্ধি করতে হবে। স্থানীয় পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে গড়ে তুলতে হলে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা জরুরি।
১. সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা : স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাকে স্বায়ত্তশাসন ও বিকেন্দ্রীকরণের নামে একের পর এক কেবল নতুন নতুন প্রতিষ্ঠানের জন্ম দিলেও সাধারণ মানুষের ভাগ্য
পরিবর্তন হবে না, বরং এসব প্রতিষ্ঠানকে সরকারি নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা দিতে হবে।
২. পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সমন্বয়সাধন : গ্রাম সরকারের সফলতার জন্য এ প্রতিষ্ঠানকে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সমন্বয়সাধনের ক্ষেত্রে সফলতার পরিচয় দিতে হবে। বিশেষ করে গ্রাম সরকারের কার্যক্রম অনেকাংশেই ইউনিয়ন পরিষদের উপর নির্ভরশীল। তাই পরিষদের কার্যক্রমের সাথে সমন্বয়সাধনের মাধ্যমে গ্রাম সরকার যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে অর্থনী ভূমিকা করতে পারে। অন্তর্ভূক্ত গ্রাম সরকারগুলোর পরিকল্পনার সমন্বয়সাধন ও বাস্তবায়নে ইউনিয়ন পরিষদকে সহায়ক
ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জনের বিষয়ে সবিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ প্রয়োজনীয় গ্রামীণ
রাজস্ব আদায় ও যথাযথ ব্যবহারের ব্যর্থতাই আমাদের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর অবদমনের অন্যতম কারণ। ইউনিয়ন পালন সেক্ষেত্রে
৩. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা : আর্থিক স্বনির্ভরতা অর্জনের পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।
কেবল অনির্বাচিত ব্যক্তিদের নিয়ে গ্রাম সরকার গঠনে বিভিন্ন মহল থেকে যে আপত্তি উত্থাপিত হয়েছে তা ঘোচাতে হলে এ জাতীয়
সতর্কতা অতীব জরুরি । রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মতো মহারোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লে এ প্রতিষ্ঠান তার অস্তি
ত্ব নিশ্চিত হারাবে। সর্বোপরি গ্রাম সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তাদের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারলে
এটি জনগণের মাঝে গ্রহণযোগ্যতা পাবে এবং বর্তমান সরকারের সূচিত উন্নয়নের ধারা সুনিশ্চিতভাবে আরও বেশি কোবান হবে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, সরকার গ্রাম বাংলার উন্নয়ন ও স্থানীয় প্রশাসনকে আরও তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত করার লক্ষ্যে এবং গ্রাম পরিষদ আইনের বাধ্যবাধকতা ও দলীয় অঙ্গীকার পূরণের লক্ষ্যে গ্রাম সরকার গঠন করে। গ্রাম সরকারের কার্যাবলি আলোচনা করে দেখা যায় যে, গ্রামীণ জনপদের অবহেলিত জনগোষ্ঠীকে যাবতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অংশীদার করার জন্য এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। এ ব্যবস্থা গ্রামীণ জনগণকে অধিক মাত্রায় উন্নয়নমূলক, রাজনৈতিক ও
প্রশাসনিক ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ সুবিধা সৃষ্টির মাধ্যমে উন্নয়ন ও সুশাসনের প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।