উত্তর।ভূমিকা ঃ গ্রামীণ সমাজসেবা গ্রামোন্নয়নের এক সফল প্রচেষ্টা হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার নানা চাহিদা পূরণেই হিমশিম খাচ্ছে ছোট এই দেশটির সরকার। যেখানে অন্যান্য উন্নয়নের কথা কল্পনাই করা যায় না। তবুও গ্রামীণ সমাজসেবা কর্মসূচি সরকার হাতে নিয়েছে। ফলশ্রুতি অত্যন্ত ধীরে হলেও হাঁটি হাঁটি পা করে গ্রামগুলো জনজীবনে সুখ-সমৃদ্ধির বাতাস বইতে শুরু করেছে। বাংলাদেশে গ্রামীণ সমাজসেবার কার্যক্রম অত্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছে। তাই সরকারকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করে গ্রামীণ সমাজসেবাকে আরো বিস্তৃত করতে সচেষ্ট হতে হবে।
→ গ্রামীণ সমাজসেবার প্রশাসনিক কাঠামো ঃ গ্রামীণ সমাজসেবার প্রশাসনিক কাঠামো নিম্নরূপ :
বাংলাদেশে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক পরিচালিত অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমষ্টি উন্নয়ন কর্মসূচি হচ্ছে গ্রামীণ সমাজসেবা। এর মূল দায়িত্ব থানা সমাজসেবা কর্মকর্তার ওপর। তাকে সহায়তা করেন একজন তত্ত্বাবধায়ক, যার অধীনে রয়েছে প্রতি থানায় ৩ জন করে ইউনিয়ন সমাজকর্মী তাদের সহায়তার জন্য প্রতি ইউনিয়নে ১ জন পুরুষ ও ১ জন মহিলা গ্রাম সমাজকর্মী রয়েছে। থানা পর্যায়ে প্রশাসনিক কাজে সহায়তার জন্য ১ জন নিম্নমান
সহকারী ১ জন পিয়ন ও ১ জন প্রশিক্ষক রয়েছে। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ১ জন অতিরিক্ত পরিচালক ও জেলা পর্যায়ে ১ জন
উপপরিচালক গ্রামীণ সমাজসেবার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। এছাড়াও গ্রামীণ সমাজসেবার সাংগঠনিক কাঠামো গ্রাম, ইউনিয়ন ও উপজেলা (থানা) পর্যায়ে সম্প্রসারিত । তৃণমূল তথা গ্রাম পর্যায়ে ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি এবং থাকা পর্যায়ে ১০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি রয়েছে। থানা পর্যায়ের সভাপতি হচ্ছে থানা প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সদস্য সচিব হচ্ছেন থানা সমাজসেবা কর্মকর্তা। তাছাড়া সার্বিকভাবে রয়েছে একটি
“সমন্বয় কাউন্সিল”। এসব কমিটি ও কাউন্সিল কর্মসূচি প্রণয়ন, বাস্তবায়ন, তত্ত্বাবধান, সমন্বয় সাধনের পাশাপাশি যথার্থভাবে মূল্যায়ণ করে থাকে। ফলশ্রুতিতে গ্রামীণ সমাজসেবার কর্মসূচি দ্রুত বাস্তবতার মুখ দেখতে পায়। বাংলাদেশ সরকার দেশ ও জনগণের কল্যাণে বেশ তৎপর। তাই সরকার জনজীবনের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে গ্রামীণ সমাজসেবার
প্রশাসনিক কাঠামোর যথার্থ পরিবর্তন আনয়নে অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, গ্রামীণ সমাজসেবা কতিপয় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এবং সরকারি বা বেসরকারি কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত সমষ্টি উন্নয়ন কর্মসূচিতে। যার লক্ষ্য এর প্রতিটি সদস্যেরই ভাগ্যোন্নয়ন সাধন। আর তা বাস্তবে রূপদানের জন্য সুসংগঠিত প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলা হয়। সুতরাং, বাংলাদেশ সরকার গ্রামীণ সমাজসেবার প্রশাসনিক কাঠামোকে উন্নত করলেই উন্নয়ন বেগবান হবে।