গ্রামীণ ব্যাংকে মাঠকর্ম অনুশীলনের ক্ষেত্রগুলো আলোচনা কর।

অথবা, গ্রামীণ ব্যাংকে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রগুলো আলোচনা কর।
অথবা, গ্রামীণ ব্যাংকে মাঠকর্ম অনুশীলনের পরিধি বর্ণনা কর।
অথবা, গ্রামীণ ব্যাংকে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের পরিধি বিশ্লেষণ কর।
উত্তর।৷ ভূমিকা :
গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশের একটি বিশেষায়িত ব্যাংক। এটি কোন এনজিও নয়।গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে জোবরা গ্রামে সর্বপ্রথম ক্ষুদ্রঋণদান কর্মসূচির সূচনা করেন। ব্যক্তিগতভাবে ঋণদানের অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ঋণদান কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়।
গ্রামীণ ব্যাংকে মাঠকর্ম অনুশীলন : নিম্নে গ্রামীণ ব্যাংকে মাঠকর্ম অনুশীলন সম্পর্কে আলোচনা করা হল :
১. পুঁজি সরবরাহ : গ্রামীণ দরিদ্র জনগণ পুঁজির অভাবে সরাসরি নিজেরা উৎপাদনশীল কাজ করতে পারত না।পরের অধীনে কাজ করতে হতো। গ্রামীণ ব্যাংক দরিদ্রদের ঋণদানের মাধ্যমে পুঁজির ব্যবস্থা করে যা দিয়ে গ্রামের ভূমিহীন জনগণ আয়-উপার্জনকারী কার্যক্রমে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়।
২. জনগণকে সংগঠিতকরণ : জাতীয় অগ্রগতির প্রধান শর্ত হচ্ছে সংগঠিত জনশক্তি। গ্রামীণ ব্যাংক তার কার্যক্রমে কেন্দ্র গঠনকে বাধ্যতামূলক করায় দরিদ্র জনগণ সহজেই বিভিন্ন আয়-উপার্জনকারী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হচ্ছে।
৩. শহরমুখী প্রবণতা হ্রাস : গ্রামের মানুষের নানা কারণে শহরমুখী প্রবণতা থাকে। গ্রামীণ ব্যাংক অকৃষি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে গ্রামীণ জনগণের শহরমুখী প্রবণতা থেকে দূরে আনার চেষ্টা করছে। শিক্ষানবিস সমাজকর্মী/ ব্যবহারিক প্রশিক্ষণার্থীরা এক্ষেত্রে মানুষকে সচেতন করে তোলার চেষ্টা করতে পারে যাতে শহরের উপর জনসংখ্যার চাপ কমে।
৪. স্থানীয় নেতৃত্বের বিকাশ : গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নে স্থানীয় নেতৃত্ব অত্যাবশ্যক।গ্রামীণ ব্যাংকে মাঠকর্মকালে শিক্ষানবিস সমাজকর্মী/ ব্যবহারিক প্রশিক্ষণার্থীরা দলীয় পর্যায়ের কাজে অংশগ্রহণ, কেন্দ্র গঠন এবং সদস্যদের মধ্য থেকে স্থানীয় নেতৃত্বের তৈরিতে সাহায্য করতে পারেন।
৫. আত্মকর্মসংস্থান : গ্রামীণ ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণে সহায়তা করছে। এক্ষেত্রে শিক্ষানবিস সমাজকর্মী/ ব্যবহারিক প্রশিক্ষণার্থীরা গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে সহায়তা করতে পারে।
৬. সঞ্চয়ের স্পৃহা জাগ্রতকরণ : গ্রামীণ ব্যাংক গ্রামের মানুষের মধ্যে সঞ্চয়ের স্পৃহা জাগ্রতকরণে সাহায্য করে থাকে।দরিদ্র জনগণ ব্যাংক থেকে ঋণগ্রহণ করে তা বিভিন্ন কাজে বিনিয়োগ করে এবং এর লভ্যাংশের কিছু অংশ সঞ্চয় হিসেবে রেখে দেয়। আর এ প্রক্রিয়া গ্রামীণ ব্যাংকের একটি বিধান।আর এটি ফলপ্রসূ করতে শিক্ষানবিস সমাজকর্মী/ব্যবহারিক প্রশিক্ষণার্থীরা মানুষকে সচেতন করে তুলতে পারেন।
৭. মহিলাদের উৎপাদন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ : গ্রামীণ ব্যাংক ঋণ প্রদানে মহিলাদের বেশি গুরুত্ব প্রদান করে।ঋণগ্রহণকারীর বেশিরভাগই মহিলা। ব্যাংক মহিলাদেরকে বিভিন্ন আয়-উপার্জনকারী কার্যক্রম; যেমন- হাঁস-মুরগি পালন,ধান ভানা, গাভী পালন, ধানকল স্থাপন, ছাগল পালন প্রভৃতি ক্ষেত্রে ঋণ প্রদান করে থাকে। শিক্ষানবিস সমাজকর্মী/ব্যবহারিক প্রশিক্ষণার্থীরা কিভাবে এ ঋণের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করে আত্মনির্ভরশীল হয়ে গড়ে উঠতে পারে সে ব্যাপারে সহায়তা করে থাকে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ছাড়া শিক্ষানবিস সমাজকর্মী/ ব্যবহারিক প্রশিক্ষণার্থীরা গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে ম ানুষকে একটি স্বচ্ছ ধারণা দিতে পারে। তারা মানুষকে গ্রামীণ ব্যাংকের সুবিধা নিতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%a4%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a7%80%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ad%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a8-%e0%a6%95/