গুণবাচক গবেষণা কাকে বলে? গুণবাচক গবেষণার বৈশিষ্ট্য লিখ

অথবা, গুণবাচক গবেষণা কী? এর বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।
অথবা, গুণবাচক গবেষণার সংজ্ঞা দাও। গুণবাচক গবেষণার বৈশিষ্ট্য তুলে ধর।
উত্তর : গুণবাচক গবেষণা গুণাত্মক প্রপঞ্চ নিয়ে আলোকপাত করে। গুণবাচক গবেষণায় পরিমাপন, প্রমিতকরণ ও গাণিতিক কৌশলাদির ব্যবহার ন্যূনতম। এ গবেষণার উপাত্ত এমনভাবে, সংগৃহীত হয়ে থাকে যে, তার সংগ্রহের সাথে সাথে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অনেকখানি অর্থপূর্ণভাবে ব্যক্ত হতে শুরু করে। আর এভাবে গুণাত্মক বিশ্লেষণ তার উপাত্তের ক্ষেত্রভূমিতে নিয়ে যায় সবাইকে।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী গুণবাচক গবেষণাকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। নিম্নে তাদের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সংজ্ঞা উপস্থাপন করা হলো :
কোথারি (C. R. Kothari) তাঁর ‘Research Methodology An Introduction’ শীর্ষক গ্রন্থে উল্লেখ করেন, “Qualitative research is concerned with qualitative phenomena, i.e., phenomena relating to or involving quality or lind.” অর্থাৎ, তিনি গুণবাচক গবেষণাকে গুণাত্মক প্রপঞ্চের সাথে সম্পর্কিত করে আলোচনা করেছেন।
ক্রেসওয়েল (Creswell) তাঁর ‘Research Design Qualitative and Quantitative Approaches’ শীর্ষক গ্রন্থে উল্লেখ করেন, “Qualitative research is defined as an inquiry process of understanding a social or human problem based on building a complex, holistic picture, formed with words, reporting detailed views of informants, and conducted in a natural setting.” অর্থাৎ, গুণবাচক গবেষণা মৌখিকভাবে সংগৃহীত উপাত্তকে বিস্তারিত বা সম্পূর্ণভাবে পরিবেশ করে, সংখ্যার মাধ্যমে নয় ।
গুণবাচক গবেষণার বৈশিষ্ট্য : গুণবাচক গবেষণার নিম্নোক্ত কয়েকটি বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয় :
১. এটি সংখ্যাত্মক চলক বা পরিমাপক ব্যবহার করে না।
২. এটি আরোহণমূলক বিশ্লেষণ, যেখানে মূল্যায়নকারী উপাত্তের বিশিষ্টতা আবিষ্কারে নিমগ্ন হয়ে থাকেন ।
৩. ব্যক্তিগত যোগাযোগ ও অন্তর্দৃষ্টি এখানে গুরুত্বপূর্ণ।
৪.এটি বাস্তবতাকে ভেতর থেকে প্রত্যক্ষ করতে চায়।
৫. এটির উদ্দেশ্য মানুষের অর্থবহ আচরণ ও অর্থারোপণকে অনুধাবন করা।
৬. এটি সামাজিক ক্রিয়ার অর্থ ও পুনরাবৃত্তি জানতে চায় ।
৭. এটি নির্বিচার নমুনায়ন কৌশল ব্যবহার করে না।
৮. এটি মনে করে সামাজিক জগৎ সব সময় মানব সৃষ্ট, আবিষ্কৃত নয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, গুণবাচক গবেষণায় উপাত্তসমূহ সংজ্ঞার মাধ্যমে প্রকাশিত না হয়ে বিস্তারিতভাবে পরিবেশিত হয়। এর সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করলে কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়।