অথবা; গারো সমাজের বিবাহের বর্ণনা দাও।
অথবা, গারো সমাজের বিবাহের ধরন লিখ।
অথবা, গারো সমাজের বিবাহ ব্যবস্থা কেমন?
উত্তর৷ ভূমিকা : বাংলাদেশে যেসব উপজাতি রয়েছে তাদের মধ্যে গারোরা অন্যতম। ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে, টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর অঞ্চলে গারোরা বাস করে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের মেঘালয় রাজ্য আসাম ও পার্বত্য ত্রিপুরা রাজ্যে গারোদের এক বিশাল জনগোষ্ঠী বাস করে।
গারো সমাজের পরিবার ব্যবস্থা : গারো পরিবার মাতৃসূত্রীয়। অর্থাৎ সম্পত্তি বংশ নাম মাতৃধারায় মাতা থেকে মেয়েতে বর্তায়। সেখানে মাতৃবাস রীতি অনুসরণ করা হয়, গারো পরিবার মাতৃপ্রধান। পরিবারের সম্পত্তির মালিক স্ত্রী। তবে ব্যবস্থাপনার মালিক স্বামী। তাই কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে উভয়েরই যৌথভাবেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
গারো বিবাহ ব্যবস্থা : গারো সমাজে মনোগামী বা যুগল বিবাহ রীতিই বেশি লক্ষ্য করা যায়। তবে বহু স্ত্রী বিবাহ একবারে অজানা নয়। কোনো কোনো স্বামী স্ত্রীর বংশের কোনো পাত্রীকে বিয়ে করে থাকে। গারো সমাজে Parallel cousin বিবাহ নিষিদ্ধ তবে Cross cousin বিবাহ অনুমোদিত। গারোদের বিবাহ সম্পত্তি মালিকানা এবং তার উত্তরাধিকার রীতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। বিবাহোত্তর বসবাস রীতি ও সম্পত্তি উত্তরাধিকার রীতির উপরই নির্ভরশীল। যে কন্যা মাতা থেকে সম্পত্তি অর্জন করে তাকে বলা হয় নোকনা। আর যারা পায় না তাকে বলা হয় এগেট। গারো সমাজে কন্যাকে কোন পণ দিতে হয় না। স্বামীও যৌতুক পায় না। বিয়েতে কোনো লেনদেন নেই। তবে বাঙালি সমাজের প্রভাবে ইদানীং কোনো কোনো শিক্ষিত স্বামী’ যৌতুক নিচ্ছে। খ্রিস্টান গারোদের বিয়ে চার্চে এবং
সংসারেক গারোদের বিয়ে ঐতিহ্যবাহী নিয়মে অনুষ্ঠিত হয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, গারোরা মাতৃপ্রধান বলে তাদের পরিবার ও বিয়েতে মায়ের প্রাধান্য বেশি। মাতৃরীতি অনুযায়ী পরিবার ও বিবাহ হয়ে থাকে।