গল্পকার হিসেবে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর পরিচয় দাও।

উত্তর : প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতার বিখ্যাত একটি দৈনিক পত্রিকায় তিনি কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। এরপর তিনি চাকরি করেছেন ঢাকা ও করাচির বেতারকেন্দ্রের বার্তা বিভাগে। পরে পাকিস্তান সরকারের বৈদেশিক বিভাগে যোগদান করেন সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ। কর্মসূত্রে নয়াদিল্লি, সিডনি, জাকার্তা ও লন্ডনে দায়িত্ব পালন শেষে তিনি আমৃত্যু প্যারিসে কর্মরত ছিলেন। সেখানে অবস্থানকালে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বাংলা কথাসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রূপকার। তিনি ছিলেন সমাজসচেতন সাহিত্য শিল্পী। জীবনসন্ধানী সমাজসচেতন এ শিল্পী ব্যক্তিজীবনেও সমাজ সমস্যাকে করেছেন তাঁর সৃজনকর্মের প্রধান উপকরণ ও উপজীব্য। তাঁর রচনায় উজ্জ্বলভাবে প্রতিফলিত হয়েছে ধর্মীয় ও সামাজিক কুসংস্কার, মূল্যবোধের অবক্ষয়, মানব মনের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রভৃতি। বাংলাদেশের কথাসাহিত্যকে আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করার পথিকৃৎ তিনি। তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘লালসালু’ (১৯৪৮) ফরাসি ও ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়। এ উপন্যাসই তাঁকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত করে তোলে। তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে ‘চাঁদের অমাবস্যা’, ‘কাঁদো নদী কাঁদো’ প্রভৃতি উপন্যাস; ‘নয়নচারা’, ‘দুই তীর’, গল্পগ্রন্থ; ‘বহিপীর’, ‘তরঙ্গভঙ্গ’, ‘সুড়ঙ্গ’ প্রভৃতি নাটক। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ১০ অক্টোবর জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ প্যারিসে মৃত্যুবরণ করেন।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%a8%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%a8%e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be-%e0%a6%97%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%aa-%e0%a6%b8%e0%a7%88%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%a6-%e0%a6%93%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be/