উত্তরঃ ভূমিকা : উপমহাদেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে খিলাফিত আন্দোলনের গুরুত্ব ছিল অত্যন্ত সুদুরপ্রসারী। এটা ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় বোধ এবং রাজনৈতিক চেতনা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। যদিও এ আন্দোলন ব্যর্থতা, মুসলমানগণ নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা এবং রাজনৈতিক লক্ষে উপনীত হবার কারণে জাতীয় এক্যের প্রয়োজনীয়তা প্রথম উপলব্ধি করে। তবে খিলাফত আন্দোলন ব্যর্থ হলেও এ আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই মুসলমানগণ নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য যে কোন প্রকার ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত হবার শক্তি অর্জন করে।
ব্যর্থতার কারণসমূহ : ভারতীয় মুসলমানদের খিলাফত আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতির পাশাপাশি গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে খিলাফত আন্দৌলনকে সমর্থন করার ঘোষণায় ভারতবর্ষে চলমান হিলাফত আন্দোলন অনেকটা সফলতার দিকে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত সফলতার পরিবর্তে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। খিলাফত আন্দোলন ব্যর্থতার পিছনে একাধিক কারণ বিদ্যমান ছিল। যেমন-
১ম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গী-হাঙ্গামা : কতিপয় এতিহাসিক মনে করেন যে, নিরপেক্ষ নীতির অভাবে একত্ৃবাদ ও বহুকাজের নীতিতে বিশ্বাসী মুসলমান ও হিন্দুগণ পারুপরিক সহিষ্ণৃতার নীতিতে উদ্ৃদ্ধ হতে না পারায় তাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষ সম্প্রসারিত হয়। অনেক স্থানে দাঙ্গা-
২য় গাহ্ধীজীর সিদ্ধান্ত : প্রাথমিক পর্যায়ে খিলাফত আন্দোলিন মুসলমানদের একক আন্দোলন হিসেবে পরিচালিত হলেও পরবর্তীকালে গান্ধীজীর একাত্মতা ঘোষণায় খিলাফত আন্দোলনের দিক নির্দেশনা গান্ধীজীর নিকট থেকেও আসে। গান্ধীজী হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা-হাঙ্গামা কমাতেই খিলাফত আন্দোলনের একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন |
৩য় ব্রিটিশ সরকারের কঠোর মনোভাব : ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক আন্দেলনকারীদের বিরুদ্ধে গৃহীত কঠোর নীতির ফলেও এ আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে। নেতৃবৃন্দ কারারুদ্ধ হয়ে পড়লে সুযোগ্য নেতৃত্বের অভাবে এ আন্দেলিন নিস্তেজ ও ব্যর্থ হয়ে যায়। নেতৃত্বহীন নিস্তেজ খিলাফত আন্দোলন কামালপাশা কর্তৃত বিলুপ্ত ঘোষণার পূর্ব পর্যন্ত চলতে থাকবে |
উপসংহার : ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় শুরু হওয়া খিলাফত আন্দোলনে হিন্দু সম্প্রদায়ের সহযোগিতা নতুন প্রাণ সঞ্চার করলেও হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা, ভুল সিদ্ধান্ত আর নেতৃত্হীনতায় শেষ পর্যন্ত খিলাফত আন্দোলন ব্যর্থ হয় |