অথবা, কেস স্টাডি পদ্ধতির সবল দিকগুলো লিখ।
অথবা, ঘটনা অনুধ্যান পদ্ধতির সুবিধা ব্যাখ্যা কর।
অথবা, ঘটনা অনুধ্যান পদ্ধতির সবল দিকসমূহ লিখ।
অথবা, কেস স্টাডি পদ্ধতির সুবিধাগুলো উল্লেখ কর।
উত্তরা ভূমিকা : আধুনিক সমাজে গবেষণা পদ্ধতি হিসেবে ঘটনা অনুধ্যান বা কেস স্টাডি একটি অতি জনপ্রিয় পদ্ধতি । কেস স্টাডিতে একটি নির্দিষ্ট একক নিয়ে গবেষণা করা হয় বলে গবেষকের পুরো দৃষ্টি তার নিবদ্ধ থাকে। কের স্টাডির অন্যতম সুবিধা হলো এর মাধ্যমে অনেক নতুন ও অজানা তথ্য জানা যায়। তবে এ পদ্ধতিতে সুবিধার পাশাপাশ কিছু অসুবিধা বা সীমাবদ্ধতাও রয়েছে ।
কেস স্টাডি পদ্ধতির সুবিধা : প্রতিটি পদ্ধতির ন্যায় এ পদ্ধতিয়ও কিছু সুবিধা রয়েছে। নিম্নে এর । সুবিধাসমূহ উল্লেখ করা হলো :
১. সামাজিক একক : এ পদ্ধতিটি ব্যক্তি, গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান ও গ্রাম পর্যায়ে সামাজিক একক হিসেবে গবেষণায় ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে পারে।
২. নমনীয়তা : এটি একটি নমনীয় পদ্ধতি। এখানে বিভিন্ন কৌশল যেমন- সাক্ষাৎকার, প্রশ্নমালা, পর্যবেক্ষণ, দলিল, ডায়েরি, চিঠিপত্র ইত্যাদি প্রয়োগ করে তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
৩. পূর্বানুমান গঠন : কেস স্টাডি পদ্ধতি পূর্বানুমান গঠনে সাহায্য করে। প্রত্যেক গবেষক প্রশ্নমালা ও পূর্বানুমান চূড়ান্ত করার পূর্বে প্রধান সমস্যাকেন্দ্রিক অনেক ঘটনার সঠিক বিশ্লেষণ করে দেখার চেষ্টা করবে।
৪. ব্যয় কম : এ পদ্ধতিতে গবেষণা পরিচালনা করতে খরচ কম লাগে। কেননা এখানে সমগ্রকের অধ্যয়ন না করে। দু’একটি ঘটনাকে অধ্যয়ন করা হয়।
৫. নমুনায়ন অপ্রয়োজন : নমুনায়ন অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে। নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে ব্যক্তিগত বদ্ধমূল ধারণা বা পক্ষপাত দোষে দুষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এ পদ্ধতিতে এ ধরনের নমুনা সংগ্রহের কোন প্রয়োজন পড়ে না ।
৬. ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা : কোন ঘটনার বর্তমানকে জানতে হলে ঐতিহাসিক ঘটনার প্রেক্ষাপটে জানতে হয়। এ পদ্ধতির মাধ্যমে কোন সমস্যার অতীত অবস্থা পর্যালোচনা করে বর্তমান সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা যায় ।
৭. তুলনামূলক পদ্ধতি : এটি তুলনামূলক পদ্ধতিতে সাহায্য করে। অর্থাৎ সমাজস্থ দুটি ঘটনার মধ্যে তুলনা করে একটি সার্বিক চিত্র তুলে ধরতে পারে।
৮. তত্ত্ব যাচাই : এ পদ্ধতির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা যায় এবং সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে তত্ত্বকে যাচাই করা সম্ভব হয় ।
৪. ব্যক্তিনিষ্ঠ বিষয়ের অধ্যয়ন : এ পদ্ধতির সাহায্যে কোন সামাজিক এককের ব্যক্তিনিষ্ঠ বিষয়, যেমন- ব্যক্তিত্ব, আবেগ, মানসিকতা ইত্যাদি সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায় ।
১০. জ্ঞান বৃদ্ধি : এ পদ্ধতিতে গবেষণার ফলে গবেষকের কোন বিষয় সম্পর্কে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা জন্মে । তাছাড়া এ পদ্ধতি পরবর্তী গবেষণার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, কেস স্টাডির মাধ্যমে গবেষণা করলে বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যায়। আর এ পদ্ধতির মাধ্যমে গবেষক অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন । প্রয়োজনীয় অর্থ, সময়, দক্ষতা ও উপযুক্ত গবেষক নিয়োগের দ্বারা এ পদ্ধতিতে ফলপ্রসূ গবেষণা সম্ভব ।