কেস স্টাডি পদ্ধতির অসুবিধাগুলো আলোচনা কর।

অথবা, কেস স্টাডি পদ্ধতির অসুবিধাসমূহ ব্যাখ্যা কর।
অথবা, ঘটনা অনুধ্যান পদ্ধতির দুর্বল দিকগুলো লিখ।
অথবা, ঘটনা অনুধ্যান পদ্ধতির অসুবিধাগুলো উল্লেখ কর।
অথবা, কেস স্টাডি পদ্ধতির দুর্বল দিকসমূহ তুলে ধর।
উত্তরঃ ভূমিকা :
ঘটনা অনুধ্যানে কোন বিষয়ের অনুসন্ধান সামগ্রিক দিক বিবেচনা করা হয় এর মূল লক্ষ্য হলো নির্দিষ্ট সমস্যার স্বরূপ উন্মোচন করে তার সুষ্ঠু সমাধান পরিকল্পনায় সম্যক সহায়তা করা। ফলে Case study পদ্ধতিতে কতকগুলো স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয় সেগুলো গবেষণায় ব্যবহৃত অন্যান্য পদ্ধতিগুলোকে এটা পৃথক করেছে।
কেস স্টাডি পদ্ধতির অসুবিধা : কেস স্টাডি পদ্ধতির বেশকিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো।
১. পক্ষপাত দুষ্টতা : কেস স্টাডি পদ্ধতির সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো এখানে গবেষকের পক্ষপাতদুষ্টতার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। গবেষক একটি বা স্বল্পসংখ্যক বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত থাকেন বিধায় তার ব্যক্তিগত ধ্যান- ধারণা ও মূল্যবোধ দ্বারা গবেষণা প্রভাবিত হতে পারে।
২. সাধারণীকরণের সমস্যা : এ পদ্ধতিতে দু’একটি ঘটনাকে বিশ্লেষণ করা হয় এবং এর উপর ভিত্তি করে কোন সাধারণীকরণ করা যায় না। অনেক সময় সাধারণীকরণ করলেও তা ভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।
৩. অধিক মাত্রায় স্মৃতিনির্ভর : কেস স্টাডি পদ্ধতিতে ব্যক্তির জীবন ইতিহাস প্রস্তুত করা হয় সাক্ষাৎকার ও প্রশ্নমালা তৈরির মাধ্যমে। এতে করে ব্যক্তির অতীত ঘটনা বর্ণনা করতে স্মৃতির উপর নির্ভর করতে হয় যা অনেক সময় সঠিক তথ্য নিতে ব্যর্থ হয়।
৪, গুণাত্মক তথ্য : এ পদ্ধতিতে কেবল গুণাত্মক তথ্য সংগ্রহ করা যায়। এর মাধ্যমে তথ্যের কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয় এবং সংখ্যাতাত্ত্বিক দিক হতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যায় না ।
৫. সময়ের অপচয় : কোন একটি ঘটনার ইতিহাস জানা ও লিপিবদ্ধ করার জন্য প্রচুর শ্রম ব্যয় হয়। আর পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে প্রচুর সময়ের অপচয় হয়। কেননা গবেষককে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে অর্থাৎ অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের আলোকে ঘটনাকে বিশ্লেষণ করেন। ফলে এ পদ্ধতিতে সময়ের অপচয় বেশি হয়ে থাকে।
৬. দক্ষ গবেষকের অভাব : এ পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য দক্ষ গবেষকের প্রয়োজন হয়। গবেষককে তীক্ষ্ণ মেধা ও বুদ্ধিসম্পন্ন হতে হবে। কেননা ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা এবং উত্তরদাতার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য গবেষকের দক্ষ হওয়া বাঞ্ছনীয়।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও কেস স্টাডি পদ্ধতি গবেষণার জন্য তথ্য সংগ্রহের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। এর সাহায্যে সম্পূর্ণ ঘটনারম সাধারণ ধারণা দেওয়া সম্ভব। অনেক সময় নৃবিজ্ঞান গবেষকরাও একটি কৌশল হিসেবে এ পদ্ধতি ব্যবহার করেন ।