এ বিরাট পুরুষের জীবনকথা ও বিভিন্ন রচনা আলোক পথের পথিক দেশের তরুণ সম্প্রদায়ের নিত্যসঙ্গী হবার যোগ্য।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : উদ্ধৃত অংশটুকু মানবতাবাদী জীবনদর্শনে বিশ্বাসী প্রাবন্ধিক কাজী আবদুল ওদুদ বিরচিত ‘বাংলার জাগরণ’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত হয়েছে।
প্রসঙ্গ : লেখক এখানে রাজা রামমোহন রায়ের জীবনকীর্তি তুলে ধরে সেখান থেকে তরুণ সম্প্রদায়কে শিক্ষা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্লেষণ : রাজা রামমোহন রায় বাংলার প্রাতঃস্মরণীয় এক ব্যক্তিত্ব, বাংলার জাগরণের প্রভাত সূর্য। বাঙালি জাতির সামনে যে আদর্শ তিনি রেখে গেছেন শত বছরে দেশের দ্বিতীয় কোন মনীষী তা করতে পারেনি। এ একটি লোক রামমোহন হিন্দুর সাথে তর্ক করেছেন বেদ উপনিষদ রামায়ণ মহাভারত পুরাণ তন্ত্রসংহিতা ও সেই সমস্তের টীকা নিয়ে, মুসলমানের সাথে তর্ক করেছেন কুরআন হাদিস ফেকা মন্তেক ইত্যাদি নিয়ে আর খ্রিস্টানদের সাথে তর্কে ব্যবহার করেছেন ইংরেজি গ্রিক ও হিব্রু বাইবেল ও বড় বড় খ্রিস্টান পণ্ডিতের মতামত অনুসরণ করে। এই রামমোহনই আবার সতীদাহ নিবারণের জন্য লড়েছেন, মুদ্রাযন্ত্রের স্বাধীনতা, চীনের সাথে অবাধ বাণিজ্য, নারীর দায়াধিকার প্রতিষ্ঠাসহ বাংলা ব্যাকরণ রচনা করে ইংরেজের শাসনের সমালোচনা করেছেন ও প্রয়োজনে সরকারকে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করেছেন। বাংলা, ইংরেজি ও ফারসি ভাষায় রচনা করেছেন মূল্যবান গ্রন্থ। রামমোহন একটি আদর্শের নাম। তাঁর রচিত গ্রন্থ বাঙালির জীবনদর্শন। তাই প্রবন্ধকার মন্তব্য করেছেন এ বিরাট পুরুষের জীবনকথা ও বিভিন্ন রচনা আলোক পথের পথিক দেশের তরুণ সম্প্রদায়ের নিত্যসঙ্গী হবার যোগ্য।
মন্তব্য : রামমোহনের আদর্শই বাঙালি তরুণ সম্প্রদায়ের আদর্শ হওয়া উচিত। আর সেজন্য তাঁর জীবনী এবং রচিত গ্রন্থ গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করা উচিত।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a6%b0%e0%a6%a3-%e0%a6%aa%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a7%80-%e0%a6%86/