উৎস : আলোচ্য অংশটুকু প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আবুল মনসুর আহমদ রচিত ‘আয়না’ গল্প গ্রন্থের অন্তর্গত ‘হুযুর কেবলা’ গল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : পীর সাহেবের জন্য চার বিবি হালাল করার উদ্দেশ্যে প্রধান খলিফা ভণ্ড বদরুদ্দীন অন্ধ মুরিদদের প্রতারণা করে। মোরাকেবায় বসে আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন।
বিশ্লেষণ : বাড়িওয়ালার ছেলে রজবের সদ্যবিবাহিতা সুন্দরী স্ত্রী কলিমনকে দেখার পর পীর সাহেব তাকে বিবাহ করার ফন্দি
আটেন। এ ফন্দি ফিকিরের অংশ হিসেবে তিনি একটা পাতানো মোরাকেবা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে পীর সাহেব তাঁর সকল দুষ্কর্মের বান্দা একান্ত অনুগত সুফি বদরুদ্দীন খলিফাকে মোরাকেবায় বসান। মোরাকেবায় তিনি সকলকে ধোঁকা দিয়ে সুফি সাহেবের দেহে রাসূলের আত্মাকে প্রতিষ্ঠিত করার তামাশা শুরু করেন। এরপর অন্যতম খলিফা মওলানা বেলায়েত পুরি সাহেব হুযুরের নির্দেশ মত সওয়াল শুরু করেন। মওলানা সাহেব জানতে চান তাঁদের কামেল পীর নূরে ইযদানীর জওয়া সহ্য করতে পারেন না কেন। সুফি সাহেব তখন পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ঘোষণা দেন যে পীর সাহেব শরিয়ত অবহেলা করেছেন।
কীভাবে শরিয়ত অবহেলা করা হয়েছে তা জানতে চাওয়া হলে সুফি সাহেব প্রশ্ন দিয়ে বলেন- আমি শরিয়তে চার বিবি হালাল করেছি। কিন্তু পীর সাহেবের মাত্র তিন বিবি। যারা সাধারণ মানুষ তাদের এক বিবি হলেও চলে। কিন্তু যারা রুহানী ফয়েজ হাসিল করতে চায় তাদের চার বিবি থাকতে হবে। চার বিবি রাখার কারণ সম্পর্কে সুফি সাহেব বলেন- চার দিয়েই দুনিয়া। চার দিয়েই আখেরাত! খোদা চার চিজ দিয়ে সব কিছু পয়দা করেছেন। খোদার পাঠানো চার কেতাবের হেদায়েত পেতে হলে মানুষকে চার এমামের চার মাযহার অনুসারে চার তরিকা মেনে চলতে হয়। এভাবে খোদা মানুষকে চারের ফাঁদে ফেলে চার কুসরির অন্তরালে লুকিয়ে আছেন। এ চারের পর্দা ঠেলে আলমে-আমরে নূরে ইযদানীতে ফানা হতে হলে দুনিয়াতে চার বিবির ভজনা করতে হবে।
মন্তব্য : এ যুক্তিতে পীর সাহেবের চতুর্থ বিয়ে হালাল করা হয়েছিল।