ইউনিয়ন পরিষদের গঠন আলোচনা কর ।

অথবা, ইউনিয়ন পরিষদের গঠন উল্লেখ কর।
অথবা, কীভাবে ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয়?
অথবা, ইউনিয়ন পরিষদের গঠন বর্ণনা কর।
অথবা, ইউনিয়ন পরিষদের গঠন প্রক্রিয়া তুলে ধর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
বাংলাদেশের পল্লি তথা গ্রামাঞ্চরে জন্য প্রতিষ্ঠিত স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ইউনিয়ন পরিষদ, থানা বা উপজেলা পরিষদ এবং জেলা পরিষদ। এগুলোর মধ্যে প্রাথমিক এবং সর্বনিম্ন পর্যায়ের কাঠামো হলো ইউনিয়ন পরিষদ। এটি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিত্বস্বরূপ কাজ করে।
ইউনিয়ন পরিষদের গঠন : নতুন ব্যবস্থার অধীনে ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয় নিম্নোক্ত সদস্যদের নিয়ে। এগুলো হলো :
চেয়ারম্যান : ইউনিয়ন পরিষদের একজন চেয়ারম্যান থাকবে এবং তিনি ইউনিয়নের প্রাপ্তবয়স্ক ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন।
সাধারণ সদস্য : প্রতিটি ইউনিয়নকে নয়টি ওয়ার্ডে ভাগ করে প্রতিটি ওয়ার্ড হতে একজন সাধারণ সদস্য জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন।
মহিলা সদস্য : প্রতিটি ইউনিয়নকে তিনটি মহিলা ওয়ার্ডে ভাগ করে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে একজন মহিলা সদস্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের প্রাপ্তবয়স্ক ভোটারদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন।
কর্মকর্তা সদস্য : ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত ইউনিয়ন কৃষি ব্লকসুপারভাইজার, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকর্মী, পরিবার পরিকল্পনা কর্মী এবং অন্যান্য সরকারি, আধা সরকারি দফতরের কর্মকর্তা বা কর্মচারী, আনসার বা ভিডিপি ইত্যাদি থাকলে তারা সদস্য হবেন। তাদের ভোটাধিকার থাকবে না।
অন্যান্য সদস্য : সমবায় সমিতির প্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি, পশ্চাৎপদ শ্রেণি বা শ্রেণির প্রতিনিধি যেমন- জেলে, তাঁতি, ভূমিহীন শ্রমিক, দুস্থ মহিলা ইত্যাদি। তাদের ভোটাধিকার থাকবে না।
মেয়াদ : ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মেয়াদকাল পাঁচ বছর।
যোগ্যতা : ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের নিম্নোক্ত যোগ্যতা থাকা আবশ্যক। যথা :
১. বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
২. বয়স কমপক্ষে ২০ বছর হতে হবে।
৩. সংশ্লিষ্ট নির্বাচন এলাকার ভোটার হতে হবে এবং
৪. সরকারি কর্মচারী থাকা যাবে না।
এক নজরে ইউনিয়ন পরিষদের গঠন কাঠামো :
(চেয়ারম্যান)
(মেম্বার ৯ জন (৯ ওয়ার্ডে ১ জন করে এবং সরাসরি নির্বাচিত ৩ জন মহিলা)
(সচিব)
(অফিস সহকারী)
(গ্রাম্য পুলিশ)
উপসংহার : আলোচনার পরিশেষে বলা যায় যে, প্রশাসনিক গতিশীলতা ও সামাজিক, অর্থনৈতিক তথা সার্বিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ গঠন ছিল একটা সময়োচিত পদক্ষেপ। ইউনিয়ন পরিষদ গঠনের মাধ্যমে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় প্রাণ ফিরে এসেছিল।