অথবা, ইংরেজি শিক্ষার সুবিধাগুলো লিখ।
অথবা, ইংরেজি শিক্ষার ভালো দিকগুলো উল্লেখ কর।
অথবা, ইংরেজি শিক্ষার সুফল সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা দাও।
উত্তর৷ ভূমিকা : পাক-ভারত উপমহাদেশে ব্রিটিশ সরকার ইংরেজি শিক্ষার প্রবর্তন করে। কেবল শাসন কাজ পরিচালনার জন্য একদল কর্মচারী সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ১৭৮১ সালে কলিকাতা মাদ্রাসা এবং ১৯৭২ সালে বেনারসে সংস্কৃত কলেজ স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে অবশ্য ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ সরকার এদেশে আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন করে।
ইংরেজি শিক্ষার সুফল : ইংরেজি শিক্ষার তাৎক্ষণিক প্রভাবটা হয়তো ব্রিটিশের অনুকূলেই ছিল। তবে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব এদেশের জন্য তুলনামূলক সঠিক সুফল বয়ে এনেছিল। নিম্নে ইংরেজি শিক্ষার সুফল সম্পর্কে নিম্নে আলোকপাত করা হলো :
১. শিক্ষিত মধ্যবর্তী শ্রেণির উন্মেষ : ইংরেজি তথা আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার ফলে এ দেশে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির উন্মেষ হয়; যাদের অনেকের মধ্যে সৃষ্টি হয় একটি প্রগতিবাদী চিন্তা ভাবনা ।
২. পাশ্চাত্য গণতন্ত্র ও যুক্তিবাদী দর্শনের চাবিকাটি : ইংরেজি শিক্ষা ছিল আধুনিক পাশ্চাত্য গণতন্ত্র এবং যুক্তিবাদী দর্শনের চাবিকাঠি। কেননা, ইংরেজি শিক্ষার মাধ্যমে এ দেশবাসী সমাজের গণতন্ত্র, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ, তথা উদারনৈতিক ধ্যান-ধারণার সঙ্গে পরিচিত হতে থাকে।
৩. জাতীয়তাবাদী ধ্যান-ধারণায় উদ্বুদ্ধকরণ : ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে এদেশবাসীর একটা বিরাট অংশ জাতীয়তাবাদী ধ্যান-ধারণায় উদ্বুদ্ধ হয়। কেননা, ইংরেজি ভাষায় রচিত বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন, জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ইত্যাদি এদেশবাসীকে ক্রমে ব্রিটিশ-বিরোধী করে তুলতে থাকে ।
৪. আধুনিক জ্ঞানের সাথে পরিচিতি : আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার একটি অন্যতম সুফল এই যে, এর ফলে এদেশবাসী বিশ্বের নানা বিষয়ে জ্ঞানভাণ্ডারের সঙ্গে পরিচিত হতে থাকে। বিজ্ঞান, প্রকৌশল, চিকিৎসা শাস্ত্র, সামাজিক বিজ্ঞ বিজ্ঞান, দর্শন শাস্ত্র ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের সম্ভাবনা দেখা দিত না যদি এদেশে ইংরেজি শিক্ষার প্রচলন না হতো।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ইংরেজি শিক্ষা প্রথমদিকে ব্রিটিশ স্বার্থ সংরক্ষণ করলেও পরবর্তীকালে এই শিক্ষার ফলে ঔপনিবেশিক বিরোধী চিন্তা সৃষ্টি হয়। জাতীয়তাবাদী আন্দোলন তথা স্বাধীনতা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে এব এবং বিশ্বের নানা বিষয়ের জ্ঞান ভাণ্ডার এদেশবাসীর জন্য উন্মোচিত হয়।