অথবা, আওয়ামী লীগের স্বার্থক কর্মসূচিগুলো ব্যাখ্যা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন হতেই মুসলিম লীগের বিরোধী শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। পূর্ব বাংলার স্বার্থরক্ষা এবং স্বায়ত্তশাসন আদায়ের লক্ষ্যে যেসব কর্মসূচির আলোকে আওয়ামী লীগ সফলতার দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয় সেসব কর্মসূচি নিচে প্রদত্ত হলো :
১. ভাষা আন্দোলন : বাঙালিদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আন্দোলন সংগ্রাম শুরু করে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এর ফলে তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগ তীব্র আন্দোলন শুরু করে। ফলশ্রুতিতে সরকার তাদের দাবি মানতে বাধ্য হয় এবং ১৯৫৬ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা প্রদান করে।
২. ‘৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন ও সামরিক বিরোধী আন্দোলন : ১৯৬২ সালের শরীফ শিক্ষা কমিশন রিপোর্টের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলে। এ শিক্ষানীতি বাঙালি ছাত্রদের অনুকূলে আনতে অনেকটা সক্ষম হয়েছিল।
৩. ছয়দফা কর্মসূচি : পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য ১৯৬৬ সালে ছয়দফা কর্মসূচি প্রণয়ন করে যা ছিল বাঙালিদের বাঁচার দাবি।
৪. ‘৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান : ছয়দফা দাবি তীব্রতর হলে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করে এবং তাদের বিরুদ্ধে আগরতলা মামলা রুজু করে। ছাত্রসমাজের এগারো দফা দাবিসহ আওয়ামী লীগের দাবির মুখে আইয়ুব সরকার ক্ষমতা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়।
৫. ‘৭০ এর নির্বাচন ও ’৭১ এ স্বাধীনতা যুদ্ধ : আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয় এবং পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এরপর শুরু হয় ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ। জনগণকে উজ্জীবিত করার জন্য দলটি ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে। ফলশ্রুতিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আওয়ামী লীগ পূর্ব বাংলার জনগণের দাবিদাওয়া আদায়ে সব সময় সোচ্চার ছিল। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে যা দলটির একটি গৌরবোজ্জ্বল সাফল্য।