উৎস : বক্ষ্যমাণ অংশটুকু বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের অগ্রপথিক কাজী আবদুল ওদুদ বিরচিত ‘বাংলার জাগরণ’ প্রবন্ধ থেকে সংকলিত হয়েছে।
প্রসঙ্গ : বাংলার জাগরণ পাশ্চাত্যের জাগরণের অনুকরণ করে ঘটেনি; এ কথাটি বুঝাতে লেখক আলোচ্য উক্তির অবতারণা করেছেন।
বিশ্লেষণ : বাংলার জাগরণ পাশ্চাত্য প্রভাবের ফল- এ ধারণা অনেক শিক্ষিত লোক পোষণ করলেও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় পাশ্চাত্যের সাথে তার পার্থক্য যথেষ্ট লক্ষযোগ্য। রাজা রামমোহন রায়ের ব্রহ্মজ্ঞান প্রচার থেকে আরম্ভ করে বাদ্য- বাজনা ও গোহত্যা নিয়ে হিন্দু মুসলমানদের দাঙ্গা পর্যন্ত আমাদের দেশের চিন্তা ও কর্মধারা, আর ডিইস্ট এনসাইক্লোপিডিস্ট থেকে আরম্ভ করে বোলশোভিজম পর্যন্ত পাশ্চাত্য চিন্তা ও কর্মধারা। অতএব এ দু’য়ের উপর চোখ বুলিয়ে গেলে বাংলার জাগরণ এবং পাশ্চাত্যের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। বাংলার জাগরণ শুরু হয়েছে ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। আমাদের দেশ তার নিজের কর্মফলের বোঝা-ই বহন করে চলেছে। পাশ্চাত্যের সভ্যতাকে অনুকরণ করে বাংলার জাগরণ ঘটেনি। পৃথিবীর অনেক জাতির মতো বাঙালি অন্য একটি সভ্যতাকে নিজের ঐতিহ্য কৃষ্টিকালচারের উপর চেপে বসতে দেয়নি। আমাদের পরিবর্তন শুরু হয়েছে আমাদের নিজস্ব প্রয়োজনে এবং নিজস্ব সংস্কৃতি থেকে।
মন্তব্য: বাংলার জাগরণের একটি নিজস্বতা আছে তা অন্য কোন সভ্যতা থেকে ধার করা নয়।