প্রশ্নের উত্তর

হিন্দু কলেজের সাথে ডিরোজিওর নাম চিরদিনের জন্য এক সূত্রে গাঁথা হয়ে গেছে।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : বক্ষ্যমাণ অংশটুকু সুপ্রাবন্ধিক কাজী আবদুল ওদুদ বিরচিত ‘বাংলার জাগরণ’ থেকে গৃহীত হয়েছে।
প্রসঙ্গ : হিন্দু কলেজের শিক্ষক থাকাকালীন সময় ডিরোজিও তরুণ সম্প্রদায়ের মধ্যে জ্ঞানের যে আলো ছড়িয়েছিলেন তা ভুলবার নয় বুঝাতে প্রবন্ধকার আলোচ্য মন্তব্য করেছেন।
বিশ্লেষণ : ডিরোজিও এক বিস্ময়কর প্রতিভার নাম। ইউরোপীয় সভ্যতায় লালিত-পালিত এ জ্ঞানযোগীর ভারতবর্ষে আগমন এবং এদেশের কৃষ্টিকালচারে নতুন চিন্তাচেতনার সঞ্চারণ ঘটানো একটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপার। রামমোহন জাতীয় জীবনে যে সকল কর্মের প্রবর্তনার সংকল্প করেছিলেন শিক্ষার ক্ষেত্রে হিন্দু কলেজ অন্যতম। ডিরোজিও এই কলেজের চতুর্থ শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র বিশ বছর। এই অল্প বয়সে তিনি কবি ও চিন্তাশীল রূপে পরিচিত ছিলেন। ফরাসি বিপ্লবের চিন্তার স্বাধীনতাবহ্নি তাঁর ভিতরে প্রজ্বলিত ছিল। ফলে তিনি শিক্ষক হিসেবে ছাত্রদের মাঝে সে জ্ঞানের প্রায়োগিক রূপদানে প্রয়াসী হন। হিন্দু কলেজের তরুণ ছাত্রদের মনে তিনি জ্ঞানের বহ্নি জ্বালাতে সক্ষম হন। তরুণ সমাজ তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করে। তিন বছর শিক্ষকতা করার পর তিনি হিন্দু কলেজ থেকে বিতাড়িত হন। কিন্তু এরই মধ্যে শিষ্যদের চিত্তে যে আগুন তিনি জ্বালিয়ে দেন তা বাঙালি সমাজজীবনে নানা পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হয়। পরবর্তীকালে ডিরোজিওর অনেক শিষ্যই চরিত্রবিদ্যা, সত্যানুরাগ ইত্যাদির জন্য জাতীয় জীবনে গৌরবের আসন লাভ করেছিলেন। তাই হিন্দু কলেজের নাম উঠলেই ডিরোজিও সেখানে চলে আসেন অবধারিতভাবে।
মন্তব্য : হিন্দু কলেজের সাথে ডিরোজিও অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত আছেন।

হ্যান্ডনোট থেকে সংগ্রহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!