General Knowledge

যে কোনো ৪ প্রকারের/ ধরনের প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্র সম্পর্কে বর্ণনা কর।

অথবা, বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্র সম্পর্কে আলোচনা কর।
অথবা, প্রতিবন্ধীদের কল্যাণ কেন্দ্র সম্পর্কে লিখ।
উত্তরা।৷ ভূমিকা :
বিশ্বের মোট জনসংখ্যার শতকরা ১০ ভাগ প্রতিবন্ধী।বর্তমানে বাংলাদেশেও মোট জনসংখ্যার শতকরা ১০ ভাগ প্রতিবন্ধী রয়েছে বলে বিভিন্ন পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়।পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০০৪ সাল নাগাদ এদেশের প্রতিবন্ধীর সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৬০ লক্ষে যা ২০০৭ সালে ৭০ লক্ষে দাঁড়িয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বর্তমান গোটা বিশ্বে মোট প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ৭০ মিলিয়নের কাছাকাছি। এসব প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করা দরকার।
চার ধরনের প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্র : নিম্নে ৪ ধরনের প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্র সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
১. অন্ধ প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র : দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধীদেরকে সমাজে স্বাভাবিক মানুষের মতো বেঁচে থাকার জন্য তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থানের মাধ্যমে পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে ১৯৭৮ সাল হতে টঙ্গীতে এ কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এ কেন্দ্রে ১৫-২৫ বছর বয়সী ৫ম শ্রেণি উত্তীর্ণ নিম্নবর্ণিত ৬ মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে একই সাথে ৫০ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভর্তি হতে পারে। ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি হতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে ভর্তি করে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
২. কৃত্রিম অঙ্গ উৎপাদন কেন্দ্র : শারীরিক প্রতিবন্ধীদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন (ইআরসিপিএইচ) কেন্দ্রের অভ্যন্তরে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিভিন্ন কৃত্রিম অঙ্গ উৎপাদন হচ্ছে। সকল উৎপাদিত অঙ্গসমূহের মধ্যে হিয়ারিং মোল্ড,কৃত্রিম হাত, পা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। সরকার এ কার্যক্রম জোরদার করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ প্রতিষ্ঠান থেকে উৎপাদিত কৃত্রিম অঙ্গের মাধ্যমে বিগত ৫ বছরে ১৭১ জন উপকৃত হয়েছে। এজন্য ব্যয় হয়েছে ৫ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা।এ প্রতিষ্ঠান হতে শ্রবণ যন্ত্রও উৎপাদন করা হয়। বিগত ৫ বছরে শ্রবণ যন্ত্রের মাধ্যমে ৩৯০ জন উপকৃত হয়েছে। এজন্য ব্যয় হয়েছে ৭০ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।
৩. জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম : বয়স্ক অন্ধদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ১৯৭৮ সালে টঙ্গীতে এ কেন্দ্রটি চালু করা হয়। এ কেন্দ্রে অনুমোদিত আসন সংখ্যা ৫০টি। এ কেন্দ্রের মাধ্যমে সরকারি খরচে ভরণপোষণ করা হয়; প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের মধ্য হতে চাকরির মাধ্যমে পুনর্বাসিত করা হয়।
৪. গ্রামীণ প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন উপকেন্দ্র : শারীরিক প্রতিবন্ধীদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় দূরবর্তী এলাকা তথা গ্রাম এলাকার প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের সুযোগ সুবিধা সৃষ্টির লক্ষ্যে ই.আর.সি.পি.এইচ. কেন্দ্রের অধীনে ১৯৮৩ সালে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার মূলঘর নামক স্থানে গ্রামীণ প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন উপকেন্দ্র (আর.আর.সি) স্থাপন করা হয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, সরকার জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের উন্নয়ন করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার সবকটিতেই এর শাখা স্থাপন করা হয়েছে।এসব শাখার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধীদের উন্নয়ন কার্যক্রমে নিয়োজিত সংস্থাকে অনুদান বা ঋণ প্রদান করা হচ্ছে।প্রতিবন্ধী সংস্থাগুলোর কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয়সাধনের ক্ষেত্রেও এ প্রতিষ্ঠানটি ভূমিকা রাখছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!