বিবাহবিচ্ছেদ কী?

অথবা, বিবাহবিচ্ছেদ বলতে কী বুঝায়?
অথবা, বিবাহ বিচ্ছেদের সংজ্ঞা দাও।
অথবা, বিবাহবিচ্ছেদ কাকে বলে?
উত্তর৷ ভূমিকা :
বিবাহবিচ্ছেদ একটি অন্যতম সামাজিক সমস্যা। যদিও এটি স্বামী-স্ত্রীর ইচ্ছা অনিচ্ছার সাথে সম্পৃক্ত, তথাপিও তা অনেক ক্ষেত্রে সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি করে। সাধারণত বিবাহবিচ্ছেদ কোন অপরাধমূলক কাজ নয়। বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানীদের অভিমত, “এটি একটি আইনস্বীকৃত সামাজিক অবিচার। কেননা এ বিবাহবিচ্ছেদের ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নারীরা প্রবঞ্চনার শিকার হয়।
বিবাহবিচ্ছেদ : বৈবাহিক চুক্তি বা বন্ধনের বিলুপ্তি তথা সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত দাম্পত্য জীবনের পরিসমাপ্তির এক প্রক্রিয়াকে বিবাহবিচ্ছেদ বা Divorce বলে। বিবাহ প্রথা বর্তমান এমন সকল সমাজেই বিবাহবিচ্ছেদ প্রচলিত। সাধারণত স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিত্বের সংঘাত, রুচি মনোভাবের সংঘাত, সাংস্কৃতিক অসামঞ্জস্য, যৌন অসামঞ্জস্যতা, আর্থিক সংকট, আচরণগত বৈষম্য প্রভৃতি কারণে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এ বিবাহবিচ্ছেদের হার বৃদ্ধি সামাজিক সংহতির দুর্বলতার পরিচায়ক এবং তা সমাজে ও ব্যক্তিজীবনে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। বিভিন্ন ধর্মেও একে অবজ্ঞা করা হয়েছে। যেমন- ইসলাম ধর্মে বিবাহবিচ্ছেদকে বৈধ কাজের মধ্যে নিকৃষ্টতম এবং ঘৃণ্য কাজ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাছাড়া হিন্দুধর্মে ও ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মে বিবাহবিচ্ছেদের কোনো বিধানের কথাই বলেনি। সহজ কথায়, বিবাহের পরে যদি কোনো কারণে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে অমিল দেখা দেয় এবং চূড়ান্তভাবে পৃথক থাকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তখন তাকে বিবাহবিচ্ছেদ বলে ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, বিবাহবিচ্ছেদ বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান সামাজিক সমস্যা। যদিও এটি স্বামী স্ত্রী ইচ্ছা ও অনিচ্ছার উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ কেবল যৌন সম্পর্কই স্বামী স্ত্রীকে সারা জীবন একত্রে রাখতে পারে না। সন্তানের প্রতি ভালোবাসা ও তাদের প্রতি দায়িত্ব কতবের অবহেলা, দাম্পত্য জীবনে অশান্তি, পারস্পরিক ভুল বুঝাবুঝি প্রভৃতি মনোভাবের কারণে বিবাহবিচ্ছেদ সংঘটিত হয়।