প্রশ্নঃ শ্রম ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে গৃহীত সরকারের পদক্ষেপসমূহ বর্ণনা কর ।

[ad_1]

প্রশ্নঃ শ্রম ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে গৃহীত সরকারের পদক্ষেপসমূহ বর্ণনা কর ।

উত্তর ৷ ভূমিকা : দেশের কর্মক্ষম জনশক্তির জন্য প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থান অত্যন্ত জরুরি । জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধিতে শিল্পকারখানা ও প্রতিষ্ঠানসমূহের ভূমিকা অগ্রগণ্য । শিল্প , কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠানের মালিক ও শ্রমিকশ্রেণী এ গুরুত্ব দায়িত্ব পালন করে থাকে । সুতরাং দেশের কল্যাণ তথা জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের এবং শ্রমিকদের মধ্যে শান্তি ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার উদ্দেশ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়াধীন শ্রম পরিদপ্তর বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে । এছাড়া শ্রম পরিদপ্তর শিল্প সম্পর্ক , শ্রম কল্যাণ , ট্রেড ইউনিয়ন কর্ম তৎপরতা , শ্রম বিরোধের নিষ্পত্তি , শ্রমিক শিক্ষা এবং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে শ্রমিকদের উদ্বুদ্ধকরণে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে । সরকারের পদক্ষেপসমূহ : এসব ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক গৃহীত কতিপয় কর্মকাণ্ডের সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নে তুলে ধরা হলো :

১. দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ : দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য দেশের বিপুল সংখ্যক বেক জনগোষ্ঠীকে দক্ষতা উন্নয়ন প্রদানের মাধ্যমে মানবসম্পদে পরিণত করার লক্ষ্যে জনশক্তি , কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো কর্তৃক দেশের ২৬ টি জেলায় মহিলাদের জন্য ৬ টি সহ মোট ২৬ টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে । এখানে ১৯ টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে । বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজিও প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে ।

২. শিশু শ্রম : শিশু শ্রম নিরসন বর্তমান বিশ্বে একটি স্পর্শকাতর বিষয় । এ প্রেক্ষাপটে দেশে বিদ্যমান প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্পকারখানা হতে শিশু শ্রম নিরসনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে । ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশু শ্রম নিরসনের জন্য এ মন্ত্রণালয় একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে । এ প্রকল্পের প্রথম ও ২ য় পর্যায়ের মাধ্যমে মোট ৪০ হাজার শিশু শ্রমিককে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদানসহ দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে এবং শিশু শ্রমিকদের ২৫ হাজার পিতা – মাতাকে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে । ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শ্রমজীবী শিশুদের ২৪ মাস উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ও ৬ মাসের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মক্ষম করে তোলা এবং প্রশিক্ষণ শেষে শিশুদের সংশ্লিষ্ট ট্রেডের আলোকে প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করার লক্ষ্যে । শিশু শ্রম নিরসন ( ৩ য় পর্যায় ) শীর্ষক প্রকল্প নভেম্বর ২০১০ থেকে জুন ২০১২ পর্যন্ত মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে ।

৩. কল্যাণ : প্রজনন স্বাস্থ্য ও জেন্ডার বিষয়ে শিল্প শ্রমিক , গার্মেন্টস শ্রমিক এবং চা শ্রমিকদের সচেতন করার লক্ষ্যে UNFPA এর আর্থিক সহায়তায় দুটি প্রকল্প যথাক্রমে বিজিএমইএ এবং শ্রম পরিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়ন করা হচ্ছে । প্রকল্প দুটি হলো : “ প্রমোশন অব রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ , জেন্ডার – ইকুয়ালিটি এন্ড উইমেন্স এম পাওয়ার মেন্ট ইন গার্মেন্টস সেক্টর ” প্রকল্প এবং ” প্রমোশন অব রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ , রিপ্রোডাক্টিভ রাইট , জেন্ডার ইকুয়ালিটি এন্ড প্রিভেনশন অব এইচআইভি / এইডস ইন টি প্লানটেশন কমিউনিটিজ প্রকল্প ।

৪. নিম্নতম মজুরি বোর্ড : নিম্নতম মজুরি বোর্ড সরকারের নির্দেশে ব্যক্তিমালিকানাধীন শিল্প সেক্টরের শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করে থাকে । ২০০৬-০৭ অর্থবছর হতে ২০১০-১১ অর্থবছর পর্যন্ত ৩০ টি শিল্প সেক্টরের মজুরি ও পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে । এছাড়া বর্তমানে ৮ টি শিল্প সেক্টরের মজুরি নির্ধারণের কাজ অব্যাহত আছে ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় , দেশে ক্রমবর্ধমান শ্রমশক্তির কল্যাণ ও কর্মসংস্থানের জন্য শুধু সরকারি পদক্ষেপই যথেষ্ট নয় । বেসরকারিভাবেও ব্যবস্থা নিতে হবে তবেই শ্রমশক্তি কর্মসংস্থানের পথ সুগম হবে ।

[ad_2]