প্রশ্নঃ বাংলাদেশে সরকারি ঋণের উৎসসমূহ বর্ণনা কর ।

[ad_1]

প্রশ্নঃ বাংলাদেশে সরকারি ঋণের উৎসসমূহ বর্ণনা কর ।

উত্তর ৷ ভূমিকা : অর্থের চাহিদা মিটানোর জন্য সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকার কোন পক্ষের নিকট হতে যে ঋণ গ্রহণ করে তাকে সরকারি ঋণ বলে । দুটি উৎস থেকে সরকারি ঋণ গ্রহণ করা হয়ে থাকে । অভ্যন্তরীণ উৎস এবং বৈদেশিক উৎস । অভ্যন্তরীণ সরকার এবং দেশের ভিতরের অন্য যে কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে সরকার ঋণ গ্রহণ করতে পারে । আবার বাইরে থেকেও সরকার ঋণ গ্রহণ করতে পারে ।

সরকারি ঋণের উৎসসমূহ : নিম্নে বাংলাদেশ সরকারি ঋণের উৎসসমূহ নিয়ে আলোচনা করা হলো : অভ্যন্তরীণ ঋণ গ্রহণ :

১. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকট হতে ঋণ গ্রহণ : কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের সরকারের নির্দেশ এবং কর্মসূচি মোতাবেক পরিচালিত হয় এবং দেশের অন্যান্য ব্যাংকের ব্যাংকার হিসেবে কাজ করে থাকে । তাই সরকারের অর্থসংকটের সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের পাশে সবার আগে দাঁড়িয়ে ঋণের মাধ্যমে অর্থের সংস্থান করে থাকে ।

২. অ – আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ : দেশের ভিতর অনেক অ – আর্থিক প্রতিষ্ঠান যেমন- Insurance কোম্পানি , বিনিয়োগ ট্রাস্ট , সঞ্চয় ব্যাংক ইত্যাদি । এদের একমাত্র লক্ষ্য থাকে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে মুনাফ অর্জন করা । সরকার প্রয়োজনের সময় এদের এ বিনিয়োজিত অর্থটাকে ঋণ হিসেবে গ্রহণের মাধ্যমে চাহিদা মিটাতে পারে ।

৩. বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ : দেশের ভিতরের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নিকট অনেক সময় প্রচুর অব্যবহৃত অর্থ থেকে যায় । সরকার এসব ব্যাংকের কাছে বন্ড বিক্রি করে প্রয়োজনীয় অর্থসংগ্রহ করতে পারে । প্রয়োজনের কারণে অনেক সময় সরকার তার বন্ডগুলো ক্রয় করার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বাধ্য করে থাকে ।

৪. ব্যক্তির নিকট হতে ঋণ গ্রহণ : সরকার অনেক সময় ব্যক্তি বা জনগণের নিকট হতে ঋণ গ্রহণ করতে পারে । সাধারণত জনগণের হাতে প্রচুর পরিমাণ অলস অর্থ পড়ে থাকে । সরকার এ অর্থগুলোকে জনগণের নিকট বস্তু বিক্রয়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করে থাকে । এতে সরকারের আর্থিক চাহিদা মিটে এবং ব্যক্তির ভোগ হ্রাস পায় ও সঞ্চয় বৃদ্ধি পেয়ে থাকে ।

বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ :

১. বিদেশি সরকারের নিকট হতে ঋণ গ্রহণ : দেশের বাইরে সরকারের ঋণ সংগ্রহের অন্যতম প্রধান উৎস হলো বিদেশি সরকার । চুক্তির মাধ্যমে দেশীয় সরকার বিদেশি সরকারের নিকট থেকে ঋণের মাধ্যমে তাদের প্রয়োজনীয় অর্থ পেয়ে থাকে । এতে করে বিদেশি সরকারের সাথে দেশীয় সরকারের কূটনৈতিকসহ অন্যান্য সম্পর্কের উন্নতি ঘটে ।

২. আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান: সরকার আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ যেমন- I.M.F , World Bank , .D.A . , I.F.C , A.D.B , I.D.B প্রভৃতি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করে থাকে । এ ঋণ একটি নির্দিষ্ট মেয়াদে পরিশোধ করার কথা উল্লেখ থাকে ।

৩. বিদেশি সংস্থার নিকট হতে ঋণ : বাংলাদেশের মতো এমন উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাহায্য করার জন্য অনেক সময় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাসমূহ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় । দেশীয় সরকার এ সংস্থাসমূহের নিকট হতে সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে থাকে ।

৪. বিদেশি ব্যক্তির নিকট হতে ঋণ গ্রহণ : অর্থনৈতিক দিক থেকে শক্তিশালী অনেক দেশ রয়েছে যেমন- চীন , জাপান , রাশিয়া , যুক্তরাষ্ট্র , যুক্তরাজ্য ইত্যাদি যাদের কিছু কিছু জনগণের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ নগদ অর্থ থাকে । এরা উন্নয়নশীল দেশগুলোর নিকট সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করে । দেশীয় সরকার এ সকল ব্যক্তির নিকট থেকে ঋণ সংগ্রহ করে থাকে ।

উপসংহার : উপরের উৎসসমূহ থেকে সরকার ঋণ নিতে পারে । তবে অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিনিয়োগ ব্যাংক বা অবিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হতেও সরকার ঋণ পেয়ে থাকে ।

[ad_2]