পরিসংখ্যানের কার্যাবলি লিখ ।

অথবা, পরিসংখ্যানের কার্যাবলিসমূহ কী?
অথবা, পরিসংখ্যানের কার্যাক্রমগুলো উল্লেখ কর।
অথবা, পরিসংখ্যানের কাজগুলো তুলে ধর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
কোন পূর্বনির্ধারিত তথ্য বিশ্ব বা সমগ্রকের কোন বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সংখ্যাত্মক তথ্যাবলি সংগ্রহ এবং উপযুক্ত পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে উক্ত তথ্যবিশ্ব সম্পর্কে তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাই পরিসংখ্যানের মুখ্য উদ্দেশ্য । বিভিন্ন পরিসংখ্যানবিদগণের দেয়া সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, কোন অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে মূলত অনুসন্ধান সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ, তথ্য উপস্থাপন, তথ্য বিশ্লেষণ এবং বিশ্লেষণের ফলাফলকে ব্যাখ্যাকরণই পরিসংখ্যানের
উদ্দেশ্য এবং কার্যাবলি ।
পরিসংখ্যানের কার্যাবলি : নিম্নে পরিসংখ্যানের কার্যাবলি ব্যাখ্যা করা হলো :
১. তথ্য সংগ্রহ অনুসন্ধান সম্পর্কিত তথ্যবিশ্বকে সংজ্ঞায়িত করার পর সংজ্ঞায়িত তথ্যবিশ্ব হতে উপাত্ত সংগ্রহ করতে হয়। যে কোন পরিসংখ্যানিক অনুসন্ধানে তথ্য সংগ্রহ করাই প্রথম কাজ। পরিসংখ্যানিক উপায়ে কোন বিষয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সংগৃহীত তথ্য কাঁচামাল হিসেবে গণ্য হয়। সুতরাং সংগৃহীত তথ্য পরিমিত মান অনুসরণ না করলে বা সংগৃহীত তথ্যে ভুলত্রুটি থাকলে উক্ত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে যথার্থ মাত্রার মন্তব্যকরণ ও ত্রুটিপূর্ণ হয়। দুটি
উৎস হতে তথ্য সংগ্রহ করা যায়। যথা:
ক. প্রাথমিক তথ্য যা অনুসন্ধানের ক্ষেত্র হতে শুমারি জরিপ ও নমুনা জরিপের মাধ্যমে।
খ. মাধ্যমিক তথ্য যা প্রকাশিত, অপ্রকাশিত, সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে সংগৃহীত উপাত্ত হতে সংগ্রহ করা হয়। তবে যে উৎসই ব্যবহার করা হোক না কেন, তথ্য অবশ্যই সতর্কতার সাথে সংগ্রহ করতে হবে।
২. তথ্য প্রক্রিয়াকরণ : তথ্য সংগ্রহ করার পর প্রক্রিয়াকরণই হলো পরিসংখ্যানের দ্বিতীয় কাজ । তথ্য প্রক্রিয়াকরণ বলতে-
ক. প্রাথমিক উৎস হতে প্রাপ্ত তথ্যের মাঝে কোন ভুলত্রুটি আছে কি না তা খতিয়ে দেখা। যদি ভুলত্রুটি থাকে তার প্রয়োজনীয় সংশোধন করা অর্থাৎ তথ্যে কোন অসামঞ্জস্য থাকলে তা দূর করা।
খ. মাধ্যমিক উৎস হতে প্রাপ্ত তথ্যের সময়ের পরিবর্তনের সাথে এককের পরিবর্তন হয় কি না এবং মাধ্যমিক তথ্য সংরক্ষণে কোন ধরনের ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলে তা যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় সংশোধন করা। অর্থাৎ সংগৃহীত তথ্যগুলোকে পরবর্তীতে ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজনীয় সংশোধনের সাথে সুশৃঙ্খলভাবে সংরক্ষণ করাকে তথ্যের প্রক্রিয়াকরণ বলা হয়।
৩. তথ্যের উস্থাপন : অশ্রেণিকৃত তথ্য হতে অনুসন্ধান সম্পর্কিত কোন ধারণা পাওয়া যায় না। তথ্যের প্রক্রিয়াকরণের পরের কাজটি হচ্ছে তথ্যের উপস্থাপন। তিনটি প্রক্রিয়া ব্যবহার করে তথ্যগুলোকে উপস্থাপন করা যায় ।
ক. শ্রেণিকরণ
খ. সারণিকরণ
গ. লেখভিত্তিক উপস্থাপন ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে একথা বলা যায় যে, মূলত পরিসংখ্যান প্রক্রিয়া এমন একটি প্রক্রিয়া যা নমুনায়নের মাধ্যমে উপাত্ত সংগ্রহ, উপযুক্ত পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার এবং পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে প্রাপ্ত ফলাফলের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট মাত্রার ভ্রান্তি স্বীকার করে তথ্যবিশ্ব সম্পর্কে সুচিন্তিত ব্যাখ্যাকরণ বা মন্তব্যকরণ করা।