General Knowledge

দারিদ্র্য পরিমাপের ক্ষেত্রে দরিদ্রতাকে কয়টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে?

অথবা, দারিদ্র্যের প্রকারভেদ সম্পর্কে লিখ।
অথবা, দারিদ্র্যের শ্রেণিবিন্যাস উল্লেখ কর।
অথবা, দারিদ্র্যের পরিমাণের ক্ষেত্রে দারিদ্র্যের শ্রেণিবিন্যাস সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
দারিদ্র্য সামাজিক অসমতার একটি অন্যতম কারণ। বর্তমান বিশ্বে দেখা যায় রাষ্ট্রসমূহকে উন্নত, অনুন্নত, আর উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গণ্য করা হয়। সামাজিক অসমতার অন্যতম কারণই হলো সমাজে দরিদ্রের অস্তিত্ব।
দারিদ্র্যের প্রকারভেদ : দারিদ্র্যের পরিমাণ লক্ষ্য করতে গিয়ে দারিদ্র্যকে তিন ভাগ লক্ষ করা যায়। যথা :
১. চরম দারিদ্র্য, ২. আপেক্ষিক দারিদ্র্য ও ৩. বিমূর্ত দারিদ্র্য।
১. চরম দারিদ্র্য : সমাজব্যবস্থার শুরু থেকেই দারিদ্র্য বিষয়টি বিবেচ্য বিষয় ছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীতে দারিদ্র্য সম্পর্কে ব্যাপক গবেষণা কর্ম শুরু হয়। সব সমাজের জন্য প্রযোজ্য এমন একটি দারিদ্র্যসীমা নির্ধারণের চেষ্টা করেন। দারিদ্র্যসীমার স্কেলে এমন একটি বিন্দু স্থির করা হয় যার নিচে নামলে কাউকে দারিদ্র্য বলা যাবে এবং এ সীমার উপরে উঠলে তাকে আর দারিদ্র্য বলা যাবে না। চরম দারিদ্র্যের সংজ্ঞা দিতে এবং পরিমাণ করতে অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে Dnewnowski এবং Seati তাদের এক প্রবন্ধে “Level of Lining Index দেহের মৌলিক চাহিদার পরিমাণ নির্ণয়ে ক্যালরি ও প্রোটিনের পরিমাণের ভিত্তিতে পুষ্টিমান ঘরের গুণগতমান ধরন, জনসংখ্যার ঘনত্বের ভিত্তিতে আশ্রয় এবং শিশু মৃত্যু ও চিকিৎসা সুবিধার ভিত্তিতে স্বাস্থ্য এ তিনটি বিষয় বিবেচনা করেছেন। দেহের মৌলিক চাহিদা ছাড়াও তারা মৌল সাংস্কৃতিক চাহিদা নিয়ে আলোচনা করেছেন। শিক্ষা, নিরাপত্তা, অবসর ও চিত্তবিনোদনকে এ পর্যায়ে ধরা হয়েছে।
২. আপেক্ষিক দারিদ্র্য : দৈহিক ও সাংস্কৃতিক মৌল চাহিদার ভিত্তিতে নির্মিত চরম দারিদ্র্য প্রত্যয়টি দারিদ্র্য পরিমাপের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য তেমন সাফল্য না পাওয়ার কারণে অর্থনীতিবিদরা নতুন এক Dimentory তৈরি করেছেন দারিদ্র্য পরিমাপের জন্য। আর এ পরিমাপের ভিত্তি হলো স্থান ও কাল। এ দুয়ের ভিত্তিতেই আপেক্ষিক দারিদ্র্য বা দারিদ্র্য ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সমাজের সদস্যরাই স্থির করেন, কোন ধরনের জীবনযাত্রা তথা জীবনমান তাদের সমাজের রীতিনীতি ও ঐতিহ্য অনুযায়ী বিবেচনাসম্মত ও গ্রহণযোগ্য।
৩. বিমূর্ত দারিদ্র্য : দারিদ্র্য সম্পর্কে যারা গবেষণা করেন তারা বিমূর্ত দারিদ্র্য প্রত্যয়ের কথা বলেছেন। এক্ষেত্রে দেখা যায় কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নিজেকে দরিদ্র মনে করে কিনা। বিমূর্ত দারিদ্র্যের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত। তবে এ ধারণা সর্বক্ষেত্রে সঠিক নয় যেমন- একজন সম্পদশালী ব্যক্তি যদি কোনো কারণে সম্পদ হারিয়ে নিম্ন মধ্যবিত্তে পরিণত হয় তখন সে নিজেকে দারিদ্র্য মনে করলেও সমাজের অন্যান্য ব্যক্তিরা দরিদ্র নাও মনে করতে পারে। আবার সমাজে অনেকে দরিদ্র ভাবলেও সে নিজেকে দারিদ্র্য নাও ভাবতে পারে। বিশেষ করে ভালো চাকরি থেকে অবসরের পর যদি কেউ আর্থিক কারণে ন্যায় জীবনযাপন করে তবে সেক্ষেত্রে সে নিজেকে সহজে দরিদ্র ভাবতে পারে না।
উপসংহার : বর্তমান সমাজে বাংলাদেশে চরম দরিদ্র জনসংখ্যার হার অত্যন্ত বেশি। তবে বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে চরম দরিদ্রতার হার নিম্নমুখী লক্ষ করা যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!