অর্থনৈতিক উন্নয়নের উপর বয়স কাঠামোর প্রভাব লিখ ।

অথবা, অর্থনৈতিক উন্নয়নের উপর বয়স কাঠামোর ভূমিকা লিখ।
অথবা, অর্থনৈতিক উন্নয়নের উপর বয়স কাঠামোর অবদান লিখ।
অথবা, অর্থনৈতিক উন্নয়নের উপর বয়স কাঠামোর কার্যাবলি বর্ণনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে জনসংখ্যার বয়স ও লিঙ্গভিত্তিক বিন্যাসকে বয়স কাঠামো বলে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে বয়স কাঠামো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে বয়স কাঠামোর প্রভাব : কোনো দেশের জনসংখ্যাকে বিভিন্ন বয়ঃদলে বিভক্ত করে জনসংখ্যার আঞ্চলিক তুলনা করা হয়। মোট অধিবাসীদের পরম সংখ্যা বা শতকরা হিসেবে শিশু-কিশোর, প্রাপ্ত বয়স্ক ও

বয়ঃপ্রাপ্ত ভাগে ভাগ করা যায়। ক্রোয়োপ্লিথ মানচিত্রের সাহায্যে জনসংখ্যার বয়স কাঠামোকে বিস্তৃত অর্থে তিন ভাগে ভাগ
করেছেন । যথা : ১. শিশু-কিশোর দল, ২. বয়স্ক দল, ৩. বয়ঃপ্রাপ্ত দল।
১. শিশু-কিশোর দল : ০-৯ বা ০-১৪ বছর বয়সী জনসংখ্যাকে শিশু-কিশোর মনে করা হয়। একে কর্মে নিয়োজিত হওয়ার প্রাক্কালীন বয়স হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। এই দলের সদস্যরা উৎপাদনশীল না হলেও ক্রমশই উৎপাদনশীল হয়ে উঠে।
২. বয়স্ক দল : এক্ষেত্রে ৬০ বা ৬০+ বয়সের ছেলেমেয়েদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই দলে বয়স্ক মহিলা ও বিধবার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। এরা সকলেই অনুৎপাদনশীল বা অর্থনৈতিকভাবে অবসর জীবনযাপনকারী।
৩. বয়ঃপ্রাপ্ত দল : সাধারণত ১৫-৬০ বয়সী জনগোষ্ঠীকে এ দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ দল সবচেয়ে বেশি উৎপাদনশীল খাতে কর্মক্ষম থাকে। এ দল অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে উৎপাদনশীল, জৈবিকভাবে সবচেয়ে উৎপাদনশীল এবং অন্যান্য দুই দলের সদস্যদের ভরণপোষণ করার দায়িত্বও এ দলের উপর অর্পিত থাকে। এদেরকে গতিশীল জনসংখ্যা বলা হয় । অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে এদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শ্রমশক্তি হচ্ছে প্রধান শক্তি। কারণ উন্নয়নের অপরাপর সব উপকরণের সমারোহ থাকলেও কর্মটি জনগোষ্ঠীর অভাব হলে সেগুলো সুষ্ঠু ব্যবহারের নিশ্চয়তা থাকে না। অর্থাৎ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীই অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূলশক্তি বলা যায়।