উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু ত্রিশোত্তর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম রূপকার বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিরচিত ‘পুঁইমাচা’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : উক্তিটি সহায়হরি চাটুয্যের স্ত্রী অন্নপূর্ণার। অন্নপূর্ণা তাঁর জ্যেষ্ঠাকন্যা ক্ষেন্তির স্বভাব চরিত্র সম্পর্কে উক্তটি করেছেন।
বিশ্লেষণ : অন্নপূর্ণা পৌষপার্বণের দিন রাতের বেলা মেয়েদের জন্য পিঠে তৈরি করতে বসেছিলেন। মেয়েগুলো সোৎসাহে তাঁর কাছে বসে পিঠে তৈরি দেখছিল। ঘণ্টাখানেক পর পিঠে বানানো শেষ হলে অন্নপূর্ণা মেয়েদের কলার পাতা হাতে নিয়ে পিঠে খাওয়ার আহ্বান জানালেন। তিনি ও-বেলার পান্তা ভাতগুলো একই সঙ্গে খাওয়ার প্রস্তাব করলে বড় মেয়ে ক্ষেন্তির তা মনঃপূত হলো না। এটি বুঝে পুঁটি প্রস্তাব করল “মা, বড়দি পিঠেই খাক। ভালোবাসে। ভাত বরং থাকুক। আমরা সকালে খাবো।” পুঁটির প্রস্তাব মোতাবেক পিঠে খাওয়া শুরু হলো। অন্নপূর্ণা দেখলেন ক্ষেন্তি কম করেও আঠারো উনিশখানা পিঠে খেয়েছে। আর নেবে কি না, অন্নপূর্ণার এই প্রশ্নের জবাবে ক্ষেন্তি ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালো। অন্নপূর্ণা তাকে আরও খান কয়েক দিলেন। ক্ষেন্তির চোখমুখ উজ্জ্বল দেখাল। সে পরম উৎসাহে খেতে লাগল। মেয়ের স্বভাব চরিত্র এবং প্রকৃতি সম্পর্কে তিনি মনে মনে বললেন, “ক্ষেন্তি যার ঘরে যাবে তাদের অনেক শান্তি দেবে।” সে খুবই শান্ত স্বভাবের। কাজকর্মে ভুলত্রুটির জন্য বকলে, মারলে, গাল দিলে ক্ষেন্তি টু শব্দটি করে না। কখনও সে উঁচু গলায় কথা বলে না।
মন্তব্য : আলোচ্য উক্তির মধ্য দিয়ে ক্ষেন্তির ভিতরকার দুর্লভ গুণের প্রকাশ ঘটেছে। তার স্বভাবের ইতিবাচক দিকটি ফুটে উঠেছে।