ফেমিনিজমের একক কোনো পথিকৃৎ নেই, কারণ এটি একটি জটিল ও বহুধা বিভক্ত আন্দোলন যা বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ব্যক্তির হাত ধরে বিকশিত হয়েছে। তবে, কিছু উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব আছেন যাদের নারীবাদী চিন্তাধারা এবং কাজের জন্য পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
পশ্চিমা বিশ্বে, মেরি ওলস্টোনক্রাফট (Mary Wollstonecraft) কে প্রায়শই আধুনিক নারীবাদের একজন প্রতিষ্ঠাতা দার্শনিক হিসেবে গণ্য করা হয়। ১৭৯২ সালে প্রকাশিত তার “এ ভিন্ডিকেশন অফ দ্য রাইটস অফ ওম্যান” (A Vindication of the Rights of Woman) বইটি নারীর অধিকার ও শিক্ষার পক্ষে একটি প্রভাবশালী যুক্তি তুলে ধরেছিল।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বের মধ্যে রয়েছেন:
- ক্রিস্টিন দে পিসান (Christine de Pizan) – পঞ্চদশ শতাব্দীর ফরাসি লেখিকা, যিনি নারীদের শিক্ষা ও সামাজিক সীমাবদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
- অলিম্পে দে গুজেস (Olympe de Gouges) – ফরাসি বিপ্লবের সময় নারীদের অধিকারের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন এবং “নারীর ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণা” (Declaration of the Rights of Woman and of the Female Citizen) প্রকাশ করেছিলেন।
- জন স্টুয়ার্ট মিল (John Stuart Mill) ও হ্যারিয়েট টেলর মিল (Harriet Taylor Mill) – উনিশ শতকের দার্শনিক, যারা নারীর ভোটাধিকার এবং অন্যান্য অধিকারের পক্ষে জোরালো সওয়াল করেছিলেন।
- বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন – ভারতীয় উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটে নারী জাগরণের অগ্রদূত হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হয়। তিনি নারী শিক্ষা এবং সমাজে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন। তার সাহিত্যকর্মও নারীর বঞ্চনা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল।
“ফেমিনিজম” শব্দটি ১৮৩৭ সালে ফরাসি সমাজতান্ত্রিক দার্শনিক চার্লস ফুরিয়ার (Charles Fourier) প্রথম ব্যবহার করেন বলে মনে করা হয়।
সংক্ষেপে, ফেমিনিজমের ধারণাটি দীর্ঘ সময় ধরে অনেক চিন্তাবিদ ও কর্মীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিকশিত হয়েছে।