মধ্যবিত্ত কাকে বলে

মধ্যবিত্ত বলতে একটি সামাজিক শ্রেণিবিন্যাসের মধ্যবর্তী একটি শ্রেণির মানুষকে বোঝায়। এই সংজ্ঞাটি বিভিন্ন মানদণ্ডের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে, যেমন:

  • আয়: মধ্যবিত্তের একটি নির্দিষ্ট আয়সীমা থাকে যা ধনী এবং দরিদ্রদের মাঝামাঝি। তবে এই আয়সীমা দেশ, অঞ্চল এবং সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়। যেমন, বাংলাদেশে ২০২৩ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, মাসিক পারিবারিক আয় ১২,৫০০ থেকে ২১,৫০০ টাকা পর্যন্ত মধ্যবিত্ত হিসেবে ধরা যায় (মুদ্রাস্ফীতি সমন্বয় করার পর)। বিশ্বব্যাপী, অভিজিৎ ব্যানার্জি ও এস্থার ডুফলোর মতে, যাদের দৈনিক আয় $২ থেকে $৬ ডলার তারা নিম্নমধ্যবিত্ত এবং যাদের দৈনিক আয় $৬ থেকে $১০ ডলার তারা উচ্চমধ্যবিত্ত।
  • পেশা: সাধারণত মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা নির্দিষ্ট পেশায় নিযুক্ত থাকেন, যেমন – বেসরকারি চাকরি, ছোট ব্যবসা, শিক্ষকতা, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি।
  • শিক্ষা: মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা সাধারণত উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে থাকেন এবং তাদের সন্তানদেরও শিক্ষাদীক্ষায় গুরুত্ব দেন।
  • জীবনযাপন: মধ্যবিত্তরা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট জীবনযাপন পদ্ধতি অনুসরণ করেন। তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ হয় এবং কিছু বিনোদনের সুযোগও থাকে। তারা সঞ্চয়ে আগ্রহী হন এবং ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগের চেষ্টা করেন। ফ্ল্যাটে থাকা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা, ইন্টারনেট ব্যবহার করা ইত্যাদিও তাদের জীবনযাপনের একটি অংশ।
  • সামাজিক অবস্থান: সমাজে মধ্যবিত্তদের একটি নির্দিষ্ট সামাজিক অবস্থান ও মূল্যবোধ থাকে। তারা সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ভূমিকা পালন করেন।

সংক্ষেপে, মধ্যবিত্তরা এমন একটি শ্রেণি যারা আর্থিকভাবে সচ্ছল হলেও উচ্চবিত্তের মতো সম্পদশালী নন, আবার দরিদ্রদের মতো মৌলিক চাহিদা পূরণেও হিমশিম খান না। তারা সাধারণত পরিশ্রমী, শিক্ষিত এবং সমাজে একটি নির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করেন।

বাংলাদেশে মধ্যবিত্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ মধ্যবিত্ত হবে বলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) একটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।

আপনার কি বাংলাদেশের মধ্যবিত্তদের জীবনযাপন বা তাদের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে আরও কিছু জানতে চান?