উঃ ভূমিকাঃ বাংলা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে বিভিন্ন তত্ত্ব প্রচলিত আছে। একটি তত্ত্ব মতে, “বাংলা” নামটি “বঙ্গ” থেকে এসেছে। “বঙ্গ” ছিলো প্রাচীন কালে দক্ষিণ এশিয়ার একটি অঞ্চল, যা বর্তমান বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি অংশ। আরেকটি তত্ত্ব অনুসারে, এই নামটি এসেছে “বঙ্গাল” শব্দ থেকে, যা প্রাচীন কালে এই অঞ্চলের অধিবাসীদের বলা হতো। এছাড়াও, সংস্কৃত শব্দ “বঙ্গ” থেকে “বাংলা” শব্দের উৎপত্তি হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। এই সমস্ত তত্ত্ব একত্রে বাংলা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে ধারণা দেয়।
বাংলা নামের উৎপত্তি:
বাংলা নামের উৎপত্তি নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিভিন্ন মতবাদ বিদ্যমান।
প্রধান মতবাদ:
- বঙ্গ:
- অনেকে মনে করেন, বাংলা নামটি এসেছে “বঙ্গ” নামক প্রাচীন রাজ্যের নাম থেকে।
- মহাভারত ও পুরাণ অনুসারে, দানব রাজা বলির পুত্র বঙ্গ এই রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
- সংস্কৃত ভাষার বিভিন্ন গ্রন্থে “বঙ্গ” নামের উল্লেখ পাওয়া যায়।
- বাঙ্গালা:
- অনেকে মনে করেন, “বাঙ্গালা” শব্দটি “বঙ্গ” ও “আল” (অঞ্চল) শব্দের সমন্বয়ে তৈরি।
- এই মত অনুসারে, “বঙ্গ” অঞ্চলকে নির্দেশ করে।
- অন্যান্য:
- কিছু ঐতিহাসিক মনে করেন, “বাংলা” নামটি এসেছে তিব্বতী ভাষার “বনস্” শব্দ থেকে, যার অর্থ “বনভূমি”।
- আবার, কেউ কেউ মনে করেন, এটি এসেছে “বাঙ্গাল” নামক একটি জাতির নাম থেকে।
সময়ক্রম:
- প্রাচীনকাল:
- খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীতে কৌটিল্যের “অর্থশাস্ত্র” গ্রন্থে “বঙ্গ” নামের উল্লেখ পাওয়া যায়।
- ১১শ শতাব্দীতে চোল রাজা রাজেন্দ্র চোলের শিলালিপিতে “বাঙ্গালা-দেশ” শব্দের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।
- মধ্যযুগ:
- মুঘল আমলে “বঙ্গাল” শব্দটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হত।
- ইংরেজরা এসে “Bengal” নাম ব্যবহার করতে থাকে।
- স্বাধীনতা:
- ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর, “বাংলা” নামটি দেশ ও ভাষা উভয়ের জন্যই ব্যবহৃত হতে থাকে।