অথবা, ডুয়োপলি বাজারে স্ট্যাকেলবার্গ মডেল ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ভূমিকা: ভুয়োপলি ফার্মের আচরণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জার্মান অর্থনীতিবিদ (Henrich Von-Stockelberg) এইচ, ভি, স্ট্যাকেলবার্গ একটি মডেল প্রদান করেন। তার নামানুসারে মডেলটি স্ট্যাকেলবার্গ মডেল হিসেবে পরিচিত।
স্ট্যাকেলবার্গ মডেল: কুর্নট মডেলের পরিবর্তিত পরিমার্জিত ও সম্প্রসারিত রূপ হচ্ছে স্ট্যাকেলবার্গ মডেল। কুটি মডেল অনুসারে একটি ফার্ম পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে অন্য ফার্মকে অনুসরণ করে। কিন্তু স্ট্যাকেলবার্গ মডেল অনুসারে ডুয়োপলি ফার্মন্বয় অনুসরণকারী হতে পারে। আবার নেতৃত্বদানকারীও হতে পারে। যদি ফার্মাট অনুসরণকারী হয় তবে ফার্মটি কুর্নট মডেল।
অনুমিতি শর্তঃ স্ট্যাকেলবার্গ মডেল যেসব অনুমতি শর্তের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। সেগুলো নিম্নরূপ-
১. বাজারে A ও B দুটি ফার্ম রয়েছে।
২. A ফার্ম নেতৃত্বদানকারী এবং ৪ ফার্ম অনুসরণকারী হতে পারে।
৩. B ফার্ম নেতৃত্বদানকারী এবং ফার্ম অনুসরণকারী হতে পারে।
৪. A ও B দুটি ফার্মই অনুসরণকারী হতে পারে।
৫. উভয় ফার্মই নেতৃত্বদানকারী হতে পারে।
চিত্রের সাহায্যে ব্যাখ্যাঃ স্ট্যাকেলবার্গ মডেল নিম্নের চিত্রের সাহায্যে প্রকাশ করা হলো- চিত্রে, OX অক্ষে A ফার্মের উৎপাদন ও OY অক্ষে B ফার্মের উৎপাদন নিদের্শ করা হয়েছে।
R.R. = ফার্মের প্রতিক্রিয়া রেখা। R&R = B ফার্মের প্রতিক্রিয়া রেখা।
π, ও, যথাক্রমে A ও B ফার্মের সম-মুনাফা রেখা।
চিত্র অনুযায়ী যদি A ও B ফার্ম একে অপরকে অনুসরণ করে তবে উভয় ফার্মের প্রতিক্রিয়া RARA ও RR এর ছেদ বিন্দু E তে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে A ও B এর উৎপাদনের পরিমাণ OX, ও OY, যা Cournot প্রদত্ত ভারসাম্যের প্রতিফলন।।
কিন্তু যদি A ফার্মটি নেতৃত্বদানকারী এবং B ফার্মটি অনুসরণকারী হয় তবে B ফার্ম তার প্রতিক্রিয়া রেখা RR অনুযায়ী উৎপাদনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এ তথ্য দক্ষ ফার্ম তথা A ফার্মের পক্ষে জানা সম্ভব। A ফার্ম B ফার্মের
প্রতিক্রিয়া বরাবর উৎপাদন নির্ধারণ করবে ও F বিন্দুতে ভারসাম্যে পৌছার চেষ্টা করবে। F বিন্দু অনুসারে ফার্মের উৎপাদন X, থেকে X, তে বৃদ্ধি পায় এবং B ফার্মের উৎপাদন Y, থেকে Y₂ তে হ্রাস পায়
যা ফার্মের মুনাফা বৃদ্ধি ও B ফার্মের মুনাফা হ্রাস নির্দেশ করে।
অনুরূপভাবে, B ফার্মটি নেতৃত্বদানকারী ও A ফার্মটি অনুসরণকারী হলে B ফার্মের মুনাফা বৃদ্ধি পায় এবং A ফার্মের মুনাফা হ্রাস পায় যা । বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত।
সুতরাং বলা যায়, নেতৃত্ব দানকারী ফার্মটি অনুসরণকারী ফার্ম অপেক্ষা বেশি মুনাফা অর্জন করে।
আবার উভয় ফার্ম নেতৃত্ব গ্রহণ করলে বাজারে অভারসাম্যের সৃষ্টি হয়। কারণ কোন ফার্ম দীর্ঘকাল অনুসারী হিসেবে থাকতে চাইবে না। ফলে উভয় নেতৃত্বদান করার চেষ্টা লিপ্ত থেকে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনের চেষ্টা করবে। ফলে M বিন্দুতে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
কিন্তু M বিন্দুতে কোন ফার্মের পক্ষে প্রত্যাশিত মুনাফা অর্জন করা সম্ভব নয়। কারণ M বিন্দুতে উৎপাদন নির্দেশিত হয় একটি ফার্ম নেতৃত্বদানকারী ও অন্যটি অনুসরণকারী। সুতরাং M বিন্দুকে অভারসাম্য বিন্দু বলা হয়।
উপসংহার: উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, উভয় ফার্মই প্রতিক্রিয়া রেখা অনুসরণ করে মুনাফা সর্বোচ্চকরণের মাধ্যমে ভারসাম্য বিন্দুতে পৌঁছাতে চেষ্টা করবে।