অথবা, সুইজির মডেল (অলিগোপলিতে)-ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভূমিকা ও অলিগোপলি বাজারে কোন পণ্যের দাম একবার নির্ধারিত হলে তা আর পরিবর্তনের সুযোগ থাকে না। ফলে বিক্রেতাগণ প্রচলিত দামেই পণ্যটি বিক্রয় করতে বাধ্য হয়। অর্থাৎ দামের অনমনীয়তা দেখা দেয়।
অলিগোপলি বাজারে দামের অনমনীয়তার বিষয়টি ব্যাখ্যা করার জন্য অধ্যাপক পল সুইজি (Prof Pal Sweezy) কোণযুক্ত চাহিদা রেখা ব্যবহার করেন। কোন চাহিদা রেখার একটি নির্দিষ্ট বিন্দুর উপরের অংশে দাম স্থিতিস্থাপতার মান বেশি এবং নিচের অংশে দাম স্থিতিস্থাপকতার মান কম হলে সেই বিন্দুতে কোণ সৃষ্টি হয়। তাই এরূপ চাহিদা রেখাকে কোণযুক্ত চাহিদা রেখা বলে। নিম্নে কোণযুক্ত চাহিদা রেখার সাহায্যে দামের অনমনীয়তার বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হল।
চিত্রের সাহায্যে ব্যাখ্যা: পার্শ্বের চিত্রে OX অক্ষে উৎপাদনের পরিমাণ (২) এবং OY অক্ষে দায় ব্যয় এবং আয় (P. C, R) পরিমাপ করা হল। DRD ফার্মের চাহিদা রেখা।
MR = প্রান্তিক আয় রেখা।
ধরি, দ্রব্যটির প্রচলিত বাজার দাম MR বা OP। এ দামে DRD, চাহিদা রেখার R বিন্দুতে কোন সৃষ্টি হয়েছে। কারণ R বিন্দুর উপরের অংশে দাম স্থিতিস্থাপকতার মান বেশি এবং নিচের অংশে দাম স্থিতিস্থাপকতার মান কম।
এখন কোন ফার্ম যদি প্রচলিত দাম (OP) অপেক্ষা বেশি দাম ধার্য করে তাহলে অন্যান্য ফার্ম দাম বাড়াবে না। ফলে দাম বৃদ্ধিকারী ফার্মের বিক্রয়ের পরিমান কমে যাবে। অর্থাৎ ক্রেতা হারাবে।
আবার যদি ফার্মটি OP দামের চেয়ে কম দাম নির্ধারন করে সেক্ষেত্রে অন্যান্য ফার্মও দাম কমাবে। ফলে দাম হ্রাসকারি ফার্মটি প্রতিযোগীর বাজার অংশ দখল করতে ব্যর্থ হবে। এমতাবস্থায় প্রচলিত দাম (OP) স্থির থাকে। আবার উৎপাদন ব্যয়েব পরিবর্তন ঘটলেও দাম অনমনীয় থাকে।
চিত্র থেকে দেখা যায়, MR রেখা EF অংশে বিচ্ছিন্ন। এ বিচ্ছিন্নতার ভিতর দিয়ে MC রেখা গমন করে।
চিত্রানুযায়ী, MC, রেখা MR কে F বিন্দুতে ছেদ করে। ফলে ভারসাম্য উৎপাদনের পরিমাণ OM এবং দাম RM = OP
আবার প্রান্তিক ব্যয় রেখা যদি MC; থেকে MC₂ তে স্থানান্তর করা হয়, সেক্ষেত্রে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও ভারসাম্য উৎপাদন OM এবং দাম RM = OP অপরিবর্তিত থাকে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, ব্যয়ের পরিবর্তন হলেও দাম অনমনীয় থাকে।
উপসংহারঃ সুতরাং উপরের আলোচনার পরিশেষে বলা যায়, অলিগোপলি বাজারে দাম একবার প্রতিষ্ঠিত হলে তা আর পরিবর্তনের কোন সুযোগ থাকে না। অর্থাৎ, দামের অনমনীয়তা দেখা দেয়।