অথবা, দাম বৈষম্যকরণের নেতিবাচক দিকগুলো উপস্থাপন কর।
উত্তর : বৈষম্যমূল্লক একচেটিয়া কারবারে উৎপাদন বিক্রয় ও মুনাফার পরিমাণ সাধারণ একচেটিয়া কারবারির তুলনায় অধিক হয়। বৈষম্যমুলক দামনীতিকে সাধারণভাবে সামাজিক ক্ষতি হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। দাম বৈষম্যকরণের কতগুলো অসুবিধা রয়েছে। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো-
১. কল্যাণ হ্রাস: দাম বৈষম্যকরণের একটি অন্যতম অসুবিধা হলো ভোক্তার কল্যাণ হ্রাস। এ অবস্থায় একই দ্রব্যের জন্য কোন কোন ক্রেতার নিকট থেকে বেশি দাম আদায় করা হয়। এতে ঐ ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
২. উপকরণের কাম্য বণ্টন হয় নাঃ দাম বৈষম্যকরণের আরেকটি অসুবিধা হলো উপকরণের অপচয় বৃদ্ধি এ ব্যবস্থায় উপকরণের কাম্য ব্যবহার হয় না। ফলে অর্থ, সময় ও উৎপাদনের অন্যান্য উপকরণের অপচয় বৃদ্ধি পায়।
৩. দক্ষতা হ্রাস: বৈষম্যমূলক একচেটিয়া কারবারি দাম বৈষম্যকরণের মাধ্যমে বাজারে ভোক্তাদের উদ্বৃত্ত আত্মসাৎ করে। ফলে অতি সহজে মুনাফা সর্বোচ্চ করতে পারে। অর্থাৎ এ বাজারে প্রতিযোগিতা থাকে না এবং বিক্রেতাকে মুনাফা সর্বোচ্চকরণের জন্য চেষ্টা করতে হয় না। তাই বিক্রেতার দক্ষতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে না।
৪. ছোট প্রতিষ্ঠান ধ্বংস: দাম বৈষম্যকরণের ফলে ক্ষুদ্রায়তন প্রতিষ্ঠানগুলো বাজার থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এমতাবস্থায় বাজারে বহদায়তন একচেটিয়া প্রতিষ্ঠানের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে ক্রোদের দুর্ভোগ বাড়ে।
৫. ক্রেতার স্বার্থ ক্ষুন্ন:অনেক সময় একচেটিয়া কারবারি দ্রব্যের চাহিদার উপর ভিত্তি করে দাম বৈষম্যকরণ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে যে বাজারে দ্রব্যের চাহিদা বেশি সে বাজারে অধিক দামে দ্রব্য বিক্রয় হয়। এতে ক্রেতার স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়।
৬. সম্পদের অপচয়: দাম বৈষম্যকারি একচেটিয়া বাজারে একক বিক্রেতা বলে দাম বৈষম্য করে সহজে মুনাফা সর্বোচ্চকরণ করতে পারে। তাই সে সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে না। ফলে সম্পদের অপচয় দেখা দেয়। পরিশেষে বলা যায়, উল্লেখিত অসুবিধাসমূহ থাকা সত্ত্বেও কোন কোন সময় দাম বৈষম্যকরণ বাঞ্চনীয় হতে পারে।কারণ দাম বৈষম্যকরণের ফলে অনেক সময় সামাজিক কল্যাণ বাড়ে। আয় ও সম্পদের সুষম বণ্টন হয়।