অথবা, পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক ও অপূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারের মধ্যে বৈসাদৃশ্যগুলো লিখ।
উত্তর: পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক ও অপূর্ণ প্রতিযোগতামূলক বাজারের পার্থক্য নিম্নে আলোচনা করা হলো-
পার্থক্যের বিষয় | পূর্ণ প্রতিযোগী মূলক বাজার | অপূর্ণ প্রতিযোগী মূলক |
১.সংজ্ঞাগত | পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজার বলতে এমন এক ধরণের বাজার ব্যবস্থাকে বুঝায় যেখানে ক্রেতা ও বিত্রেতার মধ্যে দর কষাকষির | যে বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ এবং ক্রয়-বিক্রয়ের পূর্ণ প্রতিযোগিতা থাকে না তাকে অপূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজার বলে |
২.ক্রেতা বিক্রেতা | পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতার সংখ্যা অধিক। | অপূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে বিক্রেতার সংখ্যা কম কিন্তু ক্রেতার সংখ্যা অধিক। |
৩.পণ্যের প্রকৃতি | পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে দ্রব্যটি সমজাতীয় এবং একই মান সম্পন্ন। | এ বাজারের দ্রব্যটি একই ধরণের হলেও সমজাতীয় বা একই মান সম্পন্ন নয়। |
৪.মুনাফা | এ বাজারে দীর্ঘ মেয়াদে বিক্রেতা শুধু স্বাভাবিক মুনাফা অর্জন করে | এ বাজারে বিক্রেতা দীর্ঘমেয়াদেও স্বাভাবিক বা অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করতে পারে |
৫.দামের উপর প্রভাব | এ বাজারে দ্রব্যের চাহিদা সম্পূর্ণ স্থিতিস্থাপক | এ বাজারে দ্রব্যের চাহিদা সম্পূর্ণ স্থিতিস্থাপক নয় |
৬.দামের উপর প্রভাব | এ বাজারে বিক্রেতা একক ভাবে দ্রব্যের দামের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। | এ বাজারে প্রত্যেক বিক্রেতা কম বেশি দামের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে |
৭.দাম ও উৎপাদনের পরিমাণ | পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে দ্রব্যের দাম কম ও উৎপাদনের পরিমাণ বেশি হয। | এ বাজারে দ্রব্যের দাম বেশি কিন্তু উৎপাদনের পরিমাণ কম হয়। |
৮.বিজ্ঞাপন খরচ | এ বাজারে বিজ্ঞাপনের জন্য আলাদা খরচ করতে হয়। | এই বাজারে বিজ্ঞাপনের জন্য আলাদা কোনো খরচ লাগে না। |
৯.প্রবেশাধিকার | এ বাজারে যে কোন অবাধে প্রবেশ ও প্রস্থান করতে পারি। | এ বাজারে কোনো র্ফাম অবাধে প্রবেশ ও প্রস্থান করতে পারে না। |
১০.পরিবর্তক দ্রব্য | পূর্ণপ্রতিযোগিতামূলক বাজারে দ্রব্যের নিকটতম পরিবর্তক দ্রব্য থাকে। | অপূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে দ্রব্যের নিকট পরিবর্তক দ্রব্য থাকে না। |
১১.চাহিদা রেখ | এ বাজারে বিক্রেতার দ্রব্যের চাহিদা রেখা ভূমি অক্ষের সমান্তরাল | এ বাজার বিক্রেতার দ্রব্যের চাহিদা রেখা ডান দিকে নিম্নগামী। |
১২. সরকারি নিয়ন্ত্রণ | পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সরকার কর্তৃক দাম নিয়ন্ত্রণের উপায়ও নেই, প্রয়োজনও নেই। | সরকার অনেক সময় জনস্বার্থে এ বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। |
১৩.দাম বৈষম্য | এ বাজারে বিক্রেতা বিভিন্ন বাজারে একই দামে দ্রব্য বিক্রি করতে বাধ্য হয়। | এ বাজারে বিক্রেতা শর্ত সাপেক্ষে বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন দাম ধার্য করতে পারে। |
১৪.ক্রেতাদের শোষণ | এ বাজারে বিক্রেতা কর্তৃক ক্রেতাদের শোষিত হওয়ার কোনরূপ সুযোগ নেই। | এ বাজারে বিক্রেতা ক্রেতাদের শোষণ করার অবাধ সুযোগ লাভ করে। |
১৫.বক্তাদের কল্যাণ | এ বাজারে দীর্ঘকালে স্বাভাবিক মুনাফা অর্জন করে বলে ভোক্তার কল্যাণ অর্জিত হয়। | এ বাজারে দীর্ঘকালে অস্বাভাবিক মুনাফা অর্জন করে বলে ভোক্তার কল্যাণ হ্রাস পায়। |
১৬. শ্রেণিবিভাগ | পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারকে আর কোন শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায় না। | এ বাজারকে কতিপয় ভাগে ভাগ করা যায় যেমন- একচেটিয়া, অলিগোপলি ও ডুয়োপলি ইত্যাদি। |
১৭. ভারসাম্য | উৎপাদনের ভারসাম্য অবস্থায় প্রান্তিক খরচ দামের সমান হয়। | এ বাজারে প্রান্তিক খরচ প্রান্তিক আয়ের সমান হয় কিন্তু দামের চেয়ে কম হয়। |
১৮. যোগান রেখা | এ বাজারে প্রান্তিক খরচ রেখা হল এর যোগান রেখা এবং সকল ফার্মের প্রান্তিক খরচ হল শিল্পের যোগান রেখা। | এ বাজারে দামের সঙ্গে যোগানের কোনো সম্পর্ক না থাকায় এরূপ বাজারে শিল্পের যোগান রেখা নির্ণয় করা যায় না। |
১৯. বাস্তবতা | বাস্তবে পূর্ণপ্রতিযোগিতামূলক বাজার কোথায়ও দেখা যায় না। | বাস্তবে সকল ক্ষেত্রে অপূর্ণ প্রতিযোগিতামলুক বাজার দেখতে পাওয়া যায়। |