অথবা, ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থায় রাজার অস্তিত্ব টিকে থাকার কারণ কী? লিখ।
উত্তরঃ ভূমিকা: ব্রিটেনের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাজা ও রাণী এক বিশিষ্ট মর্যাদার অধিকারী। তত্ত্বগতভাবে এয়া বিপুল ক্ষমতার অধিকারী এবং আনুষ্ঠানিকভাবে তারা দেশের প্রধান। ১৯৫১ সালে মিশরের রাজা ফারুক বলেছিলেন, “এখন মাত্র পাঁচ জন রাজা অবশিষ্ট আছেন- ইংল্যান্ডের রাজা, রুহিতন (Diamonds) হরতন (Hearts) ইশকাবন (Spade) এবং চিড়িতন (Clubs) এর রাজা।”
রাজার কোন মৃত্যু নেই: ‘রাজার মৃত্যু নেই’ প্রবচনটি অবাস্তব বলে প্রতিভাত হয়। কিন্তু প্রকৃত বিচারে প্রবচনটি গভীরভাবে অর্থবহ এবং তাৎপর্যপূর্ণ। রাজা পঞ্চন জর্জের মৃত্যু হতে পারে। তার মৃত্যুর পর অষ্টম এডওয়ার্ড রাজা হতে পারেন। কিন্তু ব্যক্তি রাজার এ পরিবর্তনের ফলে রাজতন্ত্রের কোনরূপ পরিবর্তন সাধিত হয় না। অর্থাৎ রাজতন্ত্র হলো একটি কৃত্রিম অথবা আইনগত ব্যক্তিরিশেষ এর কখনো মৃত্যু হয় না।মূলত ব্যক্তিগতভাবে কোন রাজাই অমর নয়। ব্যক্তি রাজার মৃত্যু অবধারিত। কিন্তু ব্যক্তি রাজার মৃত্যু রাজতন্ত্রের ধারাবাহিকতাকে ক্ষুণ্ণ করে না। কারণ কোন রাজার মৃত্যুর পর তার শাসনের অবসান ঘটলেও রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে না। প্রাতিষ্ঠানিক রাজতন্ত্র অব্যাহত থাকে। একজন রাজার মুত্যুর সাথে সাথে তার উত্তরাধিকারী রাজপদে অধিষ্ঠিত হন। তিনি স্বাভাবিকভাবে সকল ক্ষমতা, সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হন। তাই বলা হয়ে থাকে রাজার কোন মৃত্যু নেই।
উপসংহার: অতএব বলা যায় যে, রাজার মৃত্যু নেই প্রবচনটি ব্রিটেনে বিশেষ অর্থে প্রযুক্ত হয়। ব্যক্তি রাজার মৃত্যু হতে পারে কিন্তু প্রতিষ্ঠান হিসাবে রাজতন্ত্র স্থায়ী। এক্ষেত্রে সিংহাসন ত্যাগের কোন ব্যবস্থা নেই। তাই বলা হয় রাজার কোন মৃত্যু নেই। তাই Munro বলেছেন, “The crown is an artificial or juristic person, it is not incarnate and it never dies.”