অথবা, আইন ও সাংবিধানিক রীতিনীতির মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর।
অথবা, ব্রিটেনের আইন এবং প্রথাগত বিধানের মধ্যে বৈসাদৃশ্য উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ভূমিকা: গ্রেট ব্রিটেনের শাসনব্যবস্থার অন্যতম উৎস হল প্রথাগত বিধান বা শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি।
শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতির প্রকৃতি ও ভূমিকার মূল্যায়নের জন্য তাদের সাথে আইনের আনুষ্ঠানিক এবং কার্যগত পার্থক্যের আলোচনা প্রয়োজন। উভয়ের পার্থক্যকে সংকীর্ণ এবং ব্যাপক দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করা উচিত।
আইন ও প্রথাগত বিধানের পার্থক্য: ব্রিটেনের আইন ও প্রথাগত বিধানের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য বিদ্যমান। নিম্নে এদের মধ্যে পার্থক্য তোলে ধরা হল।
১. আইনসভা কর্তৃক প্রণীত বিধান হল আইন। আইনসভার সদস্যগণ ব্যাপক আলোচনা ও পর্যালোচনার পর ভোটের মাধ্যমে পাস করেন। প্রথা হল অলিখিত ব্যবহারিক নিয়মনীতি। প্রথা সৃষ্টি করা যায় না। প্রথা গড়ে উঠে।
২. কাগজে লিখিত আকারে থাকে বলে আইন হয় সুস্পষ্ট ও সংক্ষিপ্ত। প্রথা লিখিত আকারে থাকে না বলে হয় অনিশ্চিত।
৩. আইন আদালত ও বিচারকগণ কর্তৃক বলবৎযোগ্য। কিন্তু প্রথাকে আইনের মত বলবৎ করা যায় না।
৪. আইনের উৎপত্তি ও পরিবর্তন হয় দ্রুত। তা সকলের চোখের সামনে করা হয়। কিন্তু প্রথার উৎপত্তি ঘটে চোখের আড়লে ও মন্থরগতিতে। এজন্য প্রথাকে বিকশিত না হলে দেখা যায় না।
৫. আইন মেনে চলা সবার জন্য বাধ্যতামূলক। আইনভঙ্গ করলে শাস্তি পেতে হয়। কিন্তু প্রথা ভঙ্গ করলে কোন শাস্তি পেতে হয় না।
৬. আইন প্রয়োজন সাপেক্ষে পরিবর্তন করা যায়। জরুরি প্রয়োজনে জরুরি আইন জারি করা যায়। প্রথার ব্যাপারে একথা খাটে না। প্রথা প্রয়োজন মত তৈরি করা যায় না।
উপসংহার: উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, উল্লিখিত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও আইন ও প্রথাগত বিধানের মধ্যে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। সাধারণ দৃষ্টিতে উভয়ের তেমন কোন পার্থক্য বর্তমান আছে বলে মনে হয় না। কিন্তু আইনসভা ও সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতে, উভয়ের মধ্যে পার্থক্য থাকতে পারে। তবে ব্রিটেনের সাধারণ জনগণের কাছে উভয়ের গুরুত্বই সমান।