অথবা, শাসন বিভাগ কী কী কার্যসম্পাদন করে?
উত্তর: ভূমিকা : সরকারের শাসন বিভাগই হলো সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। কেননা প্রতিটি দেশেই শাসন বিভাগকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন পরিচালিত হয়। অর্থাৎ সরকারের মাধ্যমেই রাষ্ট্রের সকল ইচ্ছা প্রকাশিত হয়ে কাজে পরিণত হয়। মূলত আইন বিভাগ কর্তৃক প্রণীত আইনসমূহকে সরকার শাসন বিভাগের মাধ্যমেই বাস্ত বায়িত করে থাকে।
শাসন বিভাগের কার্যাবলি : বর্তমানে জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রে শাসন বিভাগ বহুবিধ কার্যসম্পাদন করে থাকে। নিম্নে
শাসন বিভাগের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা করা হলো:
১. আইন সংক্রান্ত কাজ আইন প্রণয়নের কাজ সাধারণত আইনসভার। কিন্তু বর্তমানে শাসন বিভাগ ও আইন। প্রণয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ করে। প্রায় প্রতিটি দেশেই রাষ্ট্রপ্রধান অধিবেশন আহ্বান ও মুলতুবি করার নির্দেশ দিয়ে থাকে। রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি ছাড়া বিল আইনে পরিণত হয় না।
২. বিচার সংক্রান্ত কাজ শাসন বিভাগ কিছু কিছু বিচার কাজ সম্পাদন করে। শাসন বিভাগ বিচার বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের নিয়োগ দিয়ে থাকে। শাসন বিভাগ মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করতে পারে।
৩. সামরিক কার্যাবলি : দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব রয়েছে শাসন বিভাগের উপর। সাধারণত সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে রাষ্ট্রপ্রধান সৈন্যবাহিনী গঠন, পরিচালনা এবং দেশরক্ষার কাজে অসামরিক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে থাকেন।
8.জনমত সৃষ্টি : নির্বাহী বিভাগ তাদের কর্মকাণ্ডের উপর জনসমর্থন আদায় করার চেষ্টা করেন। জনদর তাদের অনুকূলে থাকলে পরবর্তী নির্বাচনে তাদের সাফল্য লাভ করা সহজ হয়। ফলে শাসন বিভাগের একটি কাজ হচ্ছে জনগণের পক্ষে কাজ করা এবং জনমত সৃষ্টি করা।
৫. নীতি নির্ধারণ সংক্রান্ত কাজ : যে কোন রাষ্ট্রেই স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র প্রভৃতি কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতি থাকে। সরকারের শাসন বিভাগ এ নীতি নির্ধারণ ও কার্যকর করে। ব্রিটেন, ভারত প্রভৃতি দেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায়
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কেবিনেট এ নীতি প্রণয়ন করে।
উপসংহার: আলোচনার শেষ প্রান্তে এসে আমরা বলতে পারি, শাসন বিভাগ নিম্ন বিভাগের কাজ ভালোভাবে সম্পাদন করবে এটাই সবার কাম্য। তবে অন্যান্য কাজ সম্পাদন করবে ভালো কথা, এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে যেন অন্য কোন বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ না হয়।