অথবা, ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির নেতিবাচক দিক কী কী?
অথবা, ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির অসুবিধাসমূহ সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর: ভূমিকা : প্রতিটি বিষয়ের ভালোমন্দ উভয় দিক থাকে। তেমনি ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির সুবিধা অসুবিধা উভয়ই নিক আছে। ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি একদিকে যেমন ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে তেমনি নেতিবাচক ভূমিকাও পালন করে। তবে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণের মাত্রা বেশি হলে দুর্নীতি বৃদ্ধি পায়। ফলে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সমস্যা দেখা দেয়।
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির অসুবিধা : আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির নানাবিধ ত্রুটি লক্ষ্য
করেছেন। যেমন:
১. রাষ্ট্র প্রাণহীন হয়ে পড়ে: আধুনিক রাষ্ট্রে ক্ষমতার ব্যক্তিকরণের নীতি সম্ভব নয়। কারণ ক্ষমতা ব্যক্তিকেন্দ্রিক নীতির ফলে রাষ্ট্র প্রাণহীন হয়ে পড়ে। কারণ রাষ্ট্র মানুষের মতোই একটি জৈবিক প্রক্রিয়া।
২. অযৌক্তিক: ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের নীতির একটি যৌক্তিক ব্যাখ্যা দেখায় যে এই নীতিটি সরকারের তিনটি বিভাগের ক্ষমতা সমান বলে মনে করা হলেও বাস্তবে পৃথিবীর কোনো দেশেই সমান ক্ষমতা সম্পন্ন তিনটি বিভাগ নেই।
৩. শাসনের স্থবিরতা: ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের কারণে, সরকারের প্রতিটি বিভাগ সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারে একটি বিভাগের সাথে অন্য বিভাগের সম্পর্ক না থাকায় কর্মচারীদের দায়িত্ব চলে যায়, ফলে প্রশাসনে অচলাবস্থা দেখা দেয়।
৪. জনকল্যাণের ব্যাঘাত: বিভিন্ন সমালোচকদের মতে, কল্যাণ রাষ্ট্রের কল্যাণমূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গৃহীত পদক্ষেপ ক্ষমতার সম্পূর্ণ বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে কখনই সম্ভব নয়। তাই বিকেন্দ্রীকরণ নীতির জটিলতা জনকল্যাণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
৫. দায়িত্বহীনতা তৈরি করে: বিকেন্দ্রীকরণ নীতি দায়িত্বহীনতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। কারণ ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের কারণে প্রশাসনিক বিভাগ তার কাজের জন্য লেজিসলেটিভ বিভাগের কাছে দায়বদ্ধ নয়। এতে এই সরকার ব্যবস্থায় দায়িত্বহীনতার জন্ম হয়।
উপসংহার: আলোচনার শেষে আমরা বলতে পারি ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নীতির অনেক সুবিধা থাকলেও এর অসুবিধাগুলোও কোনো অংশে কম নয়, তাই আধুনিক প্রশাসন ব্যবস্থায় এ ধরনের দ্বৈত নীতি পরিত্যক্ত। কারণ এ ধরনের নীতি জনকল্যাণের স্বার্থে নয়।