অথবা, ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির ইতিবাচক দিকগুলো কী কী?
অথবা, ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির সুবিধাসমূহ সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির সার্থক গুণগুলো উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ভূমিকা : ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রয়োজনীয়তা রাষ্ট্রবিজ্ঞানে নতুন কোন বিষয় নয়। তাই বহু বছর
পূর্বেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক এরিস্টটল তাঁর আলোচনায় ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির কথা বলেন। সরকারের স্বেচ্ছাচারিতা রোখ ও নাগরিক স্বাধীনতা রক্ষার্থে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির উদ্ভব হয়েছে। তাই সরকার ব্যবস্থায় ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির বহুবিধ সুবিধা রয়েছে।
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির সুবিধা : আধুনিক শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির বহুবিধ সুবিধা বিদ্যমান যা নিম্নরূপ :
১. সরকারের লক্ষতা বৃদ্ধি : ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির অন্যতম গুণ হলো এই যে, এ নীতি প্রয়োগের ফলে সরকারের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। কেননা প্রতিটি বিভাগই অন্য বিভাগের হস্তক্ষেপ মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করে। এর ফলে আইন ও শাসন বিভাগের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
২. স্বৈরাচার প্রতিরোধ: ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ একনায়কতন্ত্র প্রতিরোধে বিশেষভাবে কার্যকর। কারণ সরকারের সবাই ক্ষমতা যখন একজনের হাতে থাকে, তখন সে স্বৈরশাসক হতে পারে। তাই সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের ক্ষমতা একটি সরকার বিভিন্ন মানুষের হাতে থাকলে তা অত্যাচারী হতে পারে না।
৩. ব্যক্তি স্বাধীনতার সুরক্ষা: বিকেন্দ্রীকরণ নীতির একটি বৈশিষ্ট্য হল এটি ব্যক্তি স্বাধীনতাকে রক্ষা করবে। স্বাধীনতার জন্য বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আবশ্যক। আর বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা যায় ক্ষমতার ব্যক্তিকরণের নীতির মাধ্যমে।
৪. গণতন্ত্রের সুরক্ষা: ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের নীতি গণতন্ত্র রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধ থাকলে বিচার বিভাগ ক্ষমতাসীন বিভাগের প্রভাবমুক্ত হয়ে সঠিক রায় দিয়ে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে পারে।
৫. জরুরী অবস্থার জন্য উপযুক্ত: জরুরী পরিস্থিতিতে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নীতির বাস্তবায়ন সফল হতে পারে। লোনা এখানে প্রশাসনিক বিভাগ আইনসভার অযৌক্তিক নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত এবং দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে।
উপসংহার: পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের নীতি জনগণের অধিকার রক্ষা এবং সরকারের স্বৈরতন্ত্রের দ্বারা জনস্বার্থে কাজ করার প্রবণতা সহ বিভিন্ন সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন কর।