অথবা, গণতন্ত্র ও একনায়কতন্ত্রের ৫টি পার্থক্য লিখ ।
অথবা, গণতন্ত্র ও একনায়কতন্ত্রের মধ্যে বৈপরীত্য উল্লেখ কর ।
উত্তরঃ ভূমিকা : গণতন্ত্র ও একনায়কতন্ত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি ধারণা । বর্তমান বিশ্বে গণতন্ত্রকে যেমন মানবজাতির জন্য আশীর্বাদ হিসাবে মনে করা হয়, তেমনি একনায়কতন্ত্রকে মানবজাতির জন্য অভিশাপ হিসেবেও মনে করা হয়। উভয়ের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও বাস্তবায়নের পদ্ধতি ভিন্ন।
গণতন্ত্র ও একনায়কতন্ত্রের পার্থক্য : নিম্নে গণতন্ত্র ও একনায়কতন্ত্রের মধ্যে পার্থক্যসমূহ তুলে ধরা হলো :
১. ক্ষমতার উৎস: গণতন্ত্র হচ্ছে জনগণের শাসন। গণতন্ত্রে ক্ষমতার উৎস হচ্ছে জনগণ। কিন্তু একনায়কতন্ত্র হলো।
এক ব্যক্তি বা একদলের শাসন। একনায়কতন্ত্রে ক্ষমতার উৎস হচ্ছে এক ব্যক্তি বা দলীয় চক্র।
২. ব্যক্তিস্বাধীনতা গণতন্ত্র ব্যক্তিস্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু একনায়কতন্ত্র ব্যক্তিস্বাধীনতার বিরোধী।
৩. রাজনৈতিক দল : গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় বহু রাজনৈতিক দল বিদ্যমান থাকে। কিন্তু একনায়কতন্ত্রে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বিদ্যমান থাকে।
৪. প্রচারমাধ্যম গণতন্ত্রে প্রচারমাধ্যমগুলোর উপর তেমন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় না। কিন্তু একনায়কতন্ত্রে প্রচারমাধ্যমগুলোর উপর কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
৫. আইনসভা : গণতন্ত্রে আইনসভা সার্বভৌম ক্ষমতা ভোগ করে। কিন্তু একনায়কতন্ত্রে আইনসভা একটি
প্রহসনমূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
৬. জাতীয়তা : গণতন্ত্র আন্তর্জাতিকতায় বিশ্বাসী। অপরদিকে, একনায়কতন্ত্রে উগ্রজাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী।
৭. অন্যান্য পার্থক্য : গণতন্ত্র ও একনায়কতন্ত্রের আরো কতগুলো পার্থক্য রয়েছে। যথা: দায়িত্বশীলতার ক্ষেত্রে, স্থায়িত্বের ক্ষেত্রে, নেতৃত্বের ক্ষেত্রে, আইনের শাসনের ক্ষেত্রে, নির্বাচন সংক্রান্ত পার্থক্য প্রভৃতি ।
উপসংহার : পরিশেষে আলোচনা শেষে বলা যায় যে, গণতন্ত্র একনায়কতন্ত্রের মধ্যে বহুবিদ পার্থক্য বিদ্যমান।
একনায়কতন্ত্র অপেক্ষা গণতন্ত্র একটি সর্বোৎকৃষ্ট জনপ্রিয় ও সর্বজনীন শাসনব্যবস্থা হিসাবে বিশ্ববাসীর নিকট সমাদৃত । তাই বলা যায়, একনায়কতন্ত্র কোনভাবেই গণতন্ত্রের বিকল্প হতে পারে না।