অথবা, সংসদীয় সরকারের অসুবিধা কী কী?
অথবা, সংসদীয় সরকারের নেতিবাচক দিক কী কী?
অথবা, মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকারের দোষসমূহ উল্লেখ কর ।
অথবা, মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকারের অসুবিধাসমূহ উল্লেখ কর ।
উত্তরঃ ভূমিকা : প্রতিটি সরকার ব্যবস্থারই ভালো-মন্দ, দোষগুণ, সুবিধা-অসুবিধা বিদ্যমান। তেমনি সংসদীয় সরকার ব্যবস্থাও এর ব্যতিক্রম নয়। সংসদীয় ব্যবস্থা নানা অভিযোগে অভিযুক্ত। ক্ষেত্র বিশেষে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা অযোগ্য হয়ে পড়ে এবং প্রশাসনে জটিলতা সৃষ্টি করে। বর্তমান সংসনীয় ব্যবস্থার নেতিবাচক ভূমিকা লক্ষণীয় মাত্রায় রয়েছে।
সংসদীয় সরকারের অসুবিধা: নিম্নে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থার অসুবিধা/ত্রুটি/নেতিবাচক দিক নিয়ে আলোচনা করা হলো:
১. জবাবদিহিতার প্রশ্ন সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় জবাবদিহির প্রশ্ন উঠে। কারণ এখানে একটি রাজনৈতিক দল সংখ্যাগরিষ্ঠতার জয়ের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের সদস্য হিসেবে আইনসভার সদস্যরা দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেন।
২. আমলাদের প্রাধান্য: সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় আমলাদের প্রাধান্য বেশি দেখা যায়। ফলে যেকোনো বিষয়ে দ্রুত ও কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া মন্ত্রিসভার জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। তাছাড়া মন্ত্রীরা তাদের কাজের জন্য আমলাদের ওপর নির্ভরশীল।
৩. শাসনে অযোগ্যতা: সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় অযোগ্য প্রতিনিধি নির্বাচনের কারণে শাসন ব্যবস্থায় জটিলতার সৃষ্টি হয়। কারণ এই শাসনব্যবস্থায় প্রশাসনিক বিষয়ে প্রাথমিক জ্ঞান ছাড়াই মন্ত্রিসভার সদস্যরা মন্ত্রিসভার দায়িত্ব নেন।
৪. আইনসভার ক্ষমতা হ্রাস একটি সংসদীয় ব্যবস্থায়, অনেক ক্ষেত্রে আইনসভার ক্ষমতা হ্রাস করা হয়। সংসদের মন্ত্রীরা ইচ্ছামত পরিচালিত হয়। সংসদীয় ব্যবস্থায় বলা হয় যে আইনসভা মন্ত্রিসভা নিয়ন্ত্রণ করে কিন্তু বাস্তবে মন্ত্রিসভা আইনসভাকে নিয়ন্ত্রণ করে।
৫. দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অভাব: যেকোনো অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে মন্ত্রিসভা পদচ্যুত হতে পারে।এ কারণে সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে পারছে না।
৬. নির্বাচনের প্রভাব: দেশের কোনো এলাকা থেকে সরকারি দল কোনো আসন না পেলে প্রায়ই তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে দেখা যায় সরকারি দল ইচ্ছাকৃতভাবে ওই এলাকার উন্নয়নে মনোযোগ দেয় না।
উপসংহার: উপসংহারে, সংসদীয় ব্যবস্থার কিছু ত্রুটি রয়েছে তবে সামগ্রিকভাবে এটি একটি কার্যকর সরকার।বেশিরভাগ গ্রহণযোগ্য সরকার। কারণ গণতন্ত্র সঠিকভাবে চর্চা হয় শুধুমাত্র একটি গণতান্ত্রিক সরকারেই।