অথবা, একনায়কতন্ত্রের প্রকৃতি উল্লেখ কর।
অথবা, একনায়কতন্ত্রের ধরন উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ভূমিকা : যে সরকার বা শাসনব্যবস্থায় শাসন ক্ষমতা কোন একজন ব্যক্তি বা ব্যক্তি সমষ্টির হাতে কেন্দ্রীভূত হয় তাকে একনায়কতন্ত্র বলে। অন্যভাবে বলা যায় কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তি সমষ্টি যখন অবাধে শাসন ক্ষমতা অর্জন ও ব্যবহার করতে পারে তখনই একনায়কতন্ত্র বা স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের সৃষ্টি হয়। পৃথিবীর প্রতিটি সরকার ব্যবস্থার কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তেমনি একনায়কতান্ত্রিক সরকারের রয়েছে কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য।
একনায়কতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য :একনায়কতন্ত্রের আদর্শ ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করলে নিম্নের বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় :
১. ব্যক্তিস্বাধীনতা বিরোধী : একনায়কতন্ত্রে ব্যক্তিস্বাধীনতা স্বীকার করা হয় না। জনসাধারণকে বলা হয় To believe, to obey, to fight. এখানে ব্যক্তির সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কোন ধরনের অধিকার স্বীকার করা হয় না।
২. কলমযোগ : একনায়কতন্ত্রে জনগণের মতামত বলপ্রয়োগের মাধ্যমে দমন করা হয়। বিরোধী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন কন্যার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়। এ ব্যবস্থায় সকল ক্ষেত্রেই দমননীতিকে প্রাধান্য দেয়া হয়।
৩. একদল, একনেতা এ শাসনব্যবস্থায় একটিমাত্র রাজনৈতিক দল থাকে। কোন বিরোধী দলের অস্তিত্ব এখানে সহ্য করা হয় না। আর এ একদলের একজন নেতা থাকেন। তার নির্দেশিত পথেই সবাইকে চলতে হয়। তার বিরুদ্ধে কথা বলার ক্ষমতা কারো নেই।
৪. ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ: ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ একনায়কতন্ত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। নির্বাহী বিভাগ একচ্ছত্র ক্ষমতার
অধিকারী এবং সাংবিধানিক কোন বাধানিষেধ একনায়কতন্ত্রে থাকে না।
৫. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রোধ : একনায়কতন্ত্রে রাষ্ট্রনায়ক হলেন সর্বেসর্বা। এখানে বিচার বিভাগ থাকে, কিন্তু বিচার বিভাগের কোন স্বাধীনতা নেই। রাষ্ট্রপ্রধানের আদেশই আইন। তিনি বিচার কাজে হস্তক্ষেপ করেন।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় দেশের শাসনক্ষমতা যখন কোন একজন স্বৈরশাসনের হাতে থাকে তখন একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। একনায়কতন্ত্রের যেসব বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় তাতে বুঝা যায় এটি জনগণের জন্য কাম্য নয়।