ভূমিকা: শিল্প মনোবিজ্ঞানে প্রশিক্ষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রশিক্ষণ শিল্পের সকল শ্রেণীর শ্রমিক, দক্ষ শ্রমিক, আধা-দক্ষ, অনিয়মিত শ্রমিকদের জন্য উন্নত প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং অধিকতর দক্ষতা নিয়ে আসে। অভিজ্ঞ কর্মচারীরা শিল্প উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে। কিন্তু এখন এই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। কারণ প্রশিক্ষিত কর্মচারীরা শিল্পে বেশি উৎপাদন করতে সক্ষম। তাছাড়া প্রশিক্ষণের ফলে শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের মানও বৃদ্ধি পায়।
সাদৃশ্যমূলক বা অনুকরণীয় পদ্ধতি:
উপমাগত পদ্ধতি কিছুপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। উদাহরণ স্বরূপ:-
১. বিষয় পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে, ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত যে কোন বাস্তব বা কাল্পনিক সমস্যা প্রশিক্ষণার্থীদের কাছে লিখিতভাবে উপস্থাপন করা হয় বা মৌখিকভাবে উপস্থাপন করা হয়। নিজেদের মধ্যে প্রশিক্ষণার্থী আলোচনার মাধ্যমে তিনি সমস্যা সমাধানের উপায় উদ্ভাবন করেন। এই পদ্ধতিটি সাধারণত পরিদর্শক, ব্যবস্থাপক এবং নির্বাহী কর্মকর্তারা সিস্টেমের সমাধান খুঁজতে ব্যবহার করেন।
২. ভূমিকা-পালন: এই পদ্ধতিটি মানুষের মিথস্ক্রিয়া করার একটি পদ্ধতি যেখানে একটি কাল্পনিক পরিস্থিতিতে বাস্তব আচরণ বিদ্যমান। এই পদ্ধতিতে, প্রতিটি অংশগ্রহণকারীকে একটি কৃত্রিম পরিস্থিতির জন্য একজন ব্যক্তির ভূমিকা পালন করতে হবে। একজন ব্যক্তি বাস্তব জীবনে যে অবস্থানে আছেন তার অনুরূপ বা ভিন্ন ভূমিকা দেওয়া যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একে অপরের অবস্থান এবং কার্যকলাপ বোঝার জন্য কর্মীকে ম্যানেজারের ভূমিকা পালন করতে বলা যেতে পারে এবং পরিচালককে পরিদর্শকের ভূমিকা পালন করতে বলা যেতে পারে।
৩. ম্যানেজমেন্ট গেম: একটি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা, বিশেষ করে পরিচালক এবং ম্যানেজাররা দক্ষ এই পদ্ধতিটি ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিটি আবিষ্কার করেছেন মনোবিজ্ঞানী ‘অ্যাপ্লাই’। ম্যানেজমেন্ট গেমটি একটি নমুনা ব্যবসায়িক পরিস্থিতি ব্যবহারের মাধ্যমে একটি গতিশীল প্রশিক্ষণ অনুশীলন। এই ধরনের খেলায়, শিক্ষার্থী বাস্তব জীবনের মতোই বিভিন্ন কাজ এবং নীতি নির্ধারণ করে।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, শিল্পে নতুন যন্ত্রপাতি ও কাজের পদ্ধতির প্রবর্তনের কারণে নতুন ও পুরাতন কর্মী থেকে শুরু করে ব্যবস্থাপক পর্যন্ত সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। শ্রবণ-দৃষ্টি প্রক্রিয়া শিল্প প্রশিক্ষণে একটি দরকারী প্রশিক্ষণ পদ্ধতি। পদ্ধতিটি একযোগে শ্রবণ এবং চাক্ষুষ প্রশিক্ষণ প্রদান করে। এ কারণে প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণে তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জিত হয়।