বুদ্ধি অভীক্ষা কত প্রকার কি কি আলোচনা কর।

রকেট সাজেশন
রকেট সাজেশন

অথবা, বুদ্ধিমত্তা অভীক্ষা মনোবৈজ্ঞানিক অভীক্ষার শ্রেণিবিভাগ দেখাও।

উত্তর:

ভূমিকা : মনোবিজ্ঞানে বুদ্ধিমত্তা অভীক্ষা, সাধারণভাবে, কাউকে সামাজিক, মানসিক বা মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা অথবা সমস্যার স্থিতির দিকে চিন্তা করতে অক্ষম বা সামগ্রিক বুদ্ধিমত্তা ক্ষয় অবস্থায় এমন একটি আবেগমুখী অবস্থাকে বুদ্ধিমত্তা অভীক্ষা বলা হয়। এটি একটি মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা হতে পারে এবং এটির ফলে ব্যক্তির দৈহিক এবং মানসিক জীবন এবং দৈহিক স্বাস্থ্যের মাধ্যমে সাধারণ জীবনে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

মনোবৈজ্ঞানিক অভীক্ষার শ্রেণিবিভাগ : প্রকৃতি, বৈশিষ্ট্য, প্রয়োগ পদ্ধতি এবং উদ্দেশ্য অনুসারে মনোবৈজ্ঞানিক অভীক্ষাকে বিভিন্নভাবে ভাগ করা যায়। নিম্নে প্রধান ভাগগুলো আলোচনা করা হলো :

ক. বুদ্ধি অভীক্ষা : পরিবেশের সকল পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে চলার ক্ষমতাকে বুদ্ধিমত্তা বলে। কর্মচারীর দক্ষতা মূল্যায়নে যেসব মনোবৈজ্ঞানিক অভীক্ষা রয়েছে তন্মধ্যে বুদ্ধিমত্তা অভীক্ষা সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। বুদ্ধিমত্তা ব্যক্তির কতকগুলো সাধারণ বৈশিষ্ট্য। এর মাধ্যমে ব্যক্তির বোধগম্যতা ও বিচারশক্তি প্রকাশ পায়। এছাড়া বুদ্ধিমত্তা অভীক্ষার সাহায্যে ব্যক্তির মানসিক ক্ষমতা ও তৎপরতা, কারণ অনুধাবন ক্ষমতা বিচারশক্তি প্রভৃতি সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায়। এর সাহায্যে পরবর্তীতে শ্রমিকের কার্য সম্পর্কিত মাত্রা সম্পর্কে অনুমান করা যায়। সাধারণ বুদ্ধিমত্তা অভীক্ষাকে তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যথা :

১. বিনোসিমোঁ বুদ্ধি অভীক্ষা,

২. ওয়েসলার বুদ্ধি অভীক্ষা এবং

৩. যৌথ বুদ্ধি অভীক্ষা ।

১. বিনোসিমো বুদ্ধি অভীক্ষা : ১৯০৫ সালে ফরাসি মনোবিজ্ঞানী আলফ্রেড বিনে এবং তাঁর সহযোগী সিমোঁ শিশুদের বুদ্ধি পরিমাপের জন্য একটি অভীক্ষা তৈরি করেন। তারা শিশুদের উপযোগী করে সহজ হতে জটিল এবং জটিল হতে জটিলতর এভাবে ৩০টি প্রশ্ন রচনা করেন। প্রশ্নগুলো ছিল নানা প্রকারের। এ অভীক্ষায় শিশুর নানা দিক প্রকাশ পেত। এ অভীক্ষাটিকে পরবর্তী সময়ে অনেকবার সংস্কার করা হয় ।

২. ওয়েসলার বুদ্ধি অভীক্ষা : ওয়েসলার বুদ্ধি অভীক্ষাটি মানসিক ডাক্তার ওয়েসলারের নামে পরিচিত। ১৯৩৯ সালে এ অভীক্ষাটি সংস্কার করা হয়। এই অভীক্ষাটি ভাষাগত এবং ভাষাবর্জিত উভয় প্রকার পদ নিয়ে গঠিত। বিনেসিমোঁর বুদ্ধি অভীক্ষাটি ছিল শিশুদের জন্য উপযোগী কিন্তু ওয়েসলারের বুদ্ধি অভীক্ষাটি পরিণত বয়সের ব্যক্তিদের জন্য উপযোগী।

৩. যৌথ বুদ্ধি অভীক্ষা : কম সময়ে এক সাথে অনেক লোকের বুদ্ধি পরিমাপের জন্য যৌথ বুদ্ধি অভীক্ষা উদ্ভাবন করা হয়েছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে যখন একই সাথে অনেক সৈন্যকে তাদের বুদ্ধি অনুযায়ী শ্রেণিবিন্যাসের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তখন দুই প্রকার অভীক্ষা পদ্ধতি উদ্ভাবনের মাধ্যমে যৌথ বুদ্ধি অভীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। এদের একটি আর্মি আলফা’ এবং অপরটি ‘আর্মি বিটা’ অভীক্ষা নামে পরিচিত।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মনোবিজ্ঞানে মনোবৈজ্ঞানিক অভীক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। সাম্প্রতিককালে কর্মের ব্যাপারে ভিন্নতা ও বৈচিত্র্যের মাত্রা বেড়ে যাওয়াতে বিশেষ বিশেষ কর্মে সাফল্য অর্জনের জন্য ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন লোকের প্রয়োজন। তাই মনোবৈজ্ঞানিক অভীক্ষাসমূহ সঠিক ও সুন্দরভাবে প্রয়োগ করে শিল্পকাখানায় অতি সহজেই উপযুক্ত কর্মচারী নির্বাচন করা সম্ভব।