গ্রামীণ ও নগর সমাজের পরিবারের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য কী?
অথবা, গ্রামীণ ও নগর সমাজের পরিবারের মধ্যে মৌলিক বৈসাদৃশ্যসমূহ কী?
অথবা, গ্রামীণ ও নগর সমাজের পরিবারের মধ্যকার মৌলিক পার্থক্যগুলো তুলে ধর। উত্তরা৷ ভূমিকা : মানবসভ্যতার ইতিহাসে গ্রাম ও শহর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। মানুষের জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে এক একটি বিশেষ স্থান বিশেষভাবে প্রাধান্য লাভ করছে। গ্রাম ও নগর সমাজের পরিবারের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায় ।
পার্থক্য : নিম্নে সমাজবিজ্ঞানের আলোকে গ্রামীণ ও নগর সমাজের পরিবারের মধ্যকার মৌলিক পার্থক্য তুলে ধরা হলো :
১. গ্রামীণ সমাজ মূলত কৃষিভিত্তিক সমাজ। এছাড়াও অনেক পেশাভিত্তিক পরিবার রয়েছে। যারা বংশ পরম্পরায় নিজেদের পেশাকে আঁকড়িয়ে রয়েছে। যেমন তাঁতি, জেলে, কুমার, কামার, গোয়ালা ইত্যাদি। অপরদিকে শহুরে
সমাজে বিভিন্ন পেশার লোক বাস করে। পরিবারের এক এক সদস্য এক এক কর্মের ও দক্ষতার অধিকারী। গ্রামীণ সমাজে ক্ষমতার মাত্রা নির্ধারিত হয় ভূমিকে কেন্দ্র করে। যে যত ভূমির মালিক সে সমাজে ততবেশি
প্রভাব খাটাতে পারে। অপরদিকে শহরের সমাজে ক্ষমতার মাত্রা নির্ধারিত হয় শিক্ষা, অর্থ ইত্যাদির ভিত্তিতে। গ্রামীণ সমাজে পরিবারগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য সম্প্রীতির বন্ধন অটুট থাকে। অপরদিকে শহরের সমাজের মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি গ্রামের মতো থাকে না। তারা পরস্পর স্বতন্ত্র থাকে ।
৪. গ্রামীণ সমাজের মানুষের মধ্যে শিক্ষার হার কম থাকে। তারা কুসংস্কারে বিশ্বাস করে। অপরদিকে শহরের সমাজের মানুষ শিক্ষিত থাকে। তারা আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানে বিশ্বাস করে।
.৫. গ্রামীণ সমাজের পরিবর্তন ধীরগতি সম্পন্ন। অপরদিকে শহর সমাজে দ্রুতগতিতে পরিবর্তন হয়। উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, গ্রামীণ ও শহুরে সমাজের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অমিল থাকলেও উভয় সমাজের মধ্যে রয়েছে সম্প্রদায়গত মানসিকতা।