চাকমা গ্রাম বা মৌজার বর্ণনা দাও।
অথবা, চাকমা মৌজা কেমন হয় ব্যাখ্যা কর।
অথবা, চাকমা মৌজা সম্পর্কে লিখ।
অথবা, চাকমা সমাজের গ্রাম বা মৌজার পরিচয় দাও।
উত্তরা৷ ভূমিকা : পার্বত্য চট্টগ্রাম ও বান্দরবান জেলার মোট আয়তন প্রায় ৫,৩০০ বর্গমাইল। এ বিস্তৃত এলাকায় বসবাসরত উপজাতির সংখ্যা অনেক। এদের মধ্যে চাকমা উপজাতি প্রধান। এখানে প্রায় ৩৯ হাজার চাকমা পরিবার বসবাস করে। গ্রাম বা মৌজা : কতকগুলো চাকমা আদাম মিলে গঠিত হয় চাকমা গ্রাম বা মৌজা।। মৌজার প্রধানকে বলা হয়
হেডম্যান। চাকমা রাজার সুপারিশক্রমে ডিপুটি কমিশনার হেডম্যানকে নিযুক্ত করেন। হেডম্যানের ছেলে হেডম্যান হবে এমন
কোনো রীতি নেই । তবে কার্যত হেডম্যানের যোগ্য পুত্র থাকলে তাকেই হেডম্যান করা হয়। হেডম্যানের কাজ হলো তার মৌজা
বা গ্রামের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করা। সালিশের মাধ্যমে গোলযোগ নিষ্পত্তি করাও তার কাজ। হেডম্যানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ
হলো খাজনা আদায় । হেডম্যান আগে কোনো ভাতা পেতেন না। তিনি কেবল কিছু পরিমাণ জমির খাজনা মওকুফ পেতেন এবং
আদায়কৃত খাজনার একটি নির্দিষ্ট অংশ কমিশন হিসেবে পেতেন। এছাড়া সালিশ জরিমানার একটা অংশও তিনি পান। কয়েক
বছর আগে থেকে হেডম্যানেরা উপর্যুক্ত সুযোগসুবিধার পাশাপাশি মাসিক ১০০ টাকা হারে ভাতাও পাচ্ছেন । হেডম্যানেরা হালকৃষি জমি থেকে আদায়কৃত খাজনা ডিপুটি কমিশনার অফিসে জমা দিয়ে একটা কমিশন লাভ করেন। পক্ষান্তরে, পাহাড়ি, জুমজমি থেকে আদায়কৃত খাজনার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ নিজে রেখে বাকিটা চাকমা রাজাকে
দেন । চাকমা রাজা আবার সেটা থেকে একটা অংশ নিজে রেখে বাকিটা সরকারকে বুঝিয়ে দেয়। উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, শিক্ষার প্রসারের ফলে চাকমা নেতৃত্বে পরিবর্তন এসেছে। চাকমারা বাঙালিদের
সাথে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেছে।