অথবা, পরীক্ষণের গবেষণায় প্রতিবেদনের কাঠামোগুলো সংক্ষেপে লিখ।
অথবা, পরীক্ষণের গবেষণায় প্রতিবেদনের উপাদানগুলো কী কী?
অথবা, প্রতিবেদনের উপাদানগুলো কী কী?
উত্তর৷ ভূমিকা : গবেষণা কাজের সর্বশেষ অথচ সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল গবেষণার প্রতিবেদন লিখন। কোন গবেষণার প্রতিবেদন না লেখা পর্যন্ত গবেষণা প্রক্রিয়াটি অসম্পূর্ণ থাকে। যে কোন বিষয়ে গবেষণার মৌল উদ্দেশ্য হল নতুন জ্ঞানের উদ্ভাবন ও আদান-প্রদান। জ্ঞানের আদান-প্রদানের জন্য প্রয়োজন গবেষণার প্রতিবেদন লিখন। একটি গবেষণার কৃতিত্ব অথবা ব্যর্থতা গবেষণা প্রতিবেদন কতটা সুচারুরূপে প্রণয়ন করা হল তার উপরই বহুলাংশে নির্ভর করে। গবেষণা কাজে গবেষক হয়তো পরিচালিত কোন তাত্ত্বিক গবেষণার কাঠামো প্রণয়ন, বাস্তবধর্মী ও যৌক্তিক অনুকল্প যাচাই, সর্তক নমুনা কাঠামো প্রস্তুত অথবা অসাধারণ কোন তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। কিন্তু এগুলোকে যথাযথ প্রতিবেদন আকারে উপস্থাপন করতে না পারলে এদের তেমন কোন গুরুত্বই থাকে না।
গবেষণা প্রতিবেদনের কাঠামো : গবেষণা প্রতিবেদনের তেমন কোন সুনির্দিষ্ট কাঠামোর কথা বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেন নি। কেননা, গবেষণার উদ্দেশ্য গবেষণা প্রতিবেদনের পাঠক এবং গবেষকের স্তরভেদে গবেষণা প্রতিবেদনের কাঠামো বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। কয়েকজন গবেষক ও লেখক গবেষণার প্রতিবেদনের সাধারণ কাঠামোর কতকগুলো ধাপ নির্দেশ করেছেন। তবে যে কোন প্রতিবেদনেই মূলত তিনটি উপাদান লক্ষ্য করা যায়। যেমন-
ক. প্রারম্ভিক বিষয়াবলি;
খ. মূল বিষয়াবলি এবং
গ. সহায়ক বিষয়াবলি।
গবেষণা প্রতিবেদনের কাঠামোর ধাপগুলো নিম্নে আলোচনা করা হল :
ক. প্রারম্ভিক বিষয়াবলি: এর অন্তর্ভুক্ত বিষয়সমূহ হল-
১. শিরোনাম।
২. গবেষক ও প্রতিষ্ঠানের নাম।
৩. মুখবন্ধ ও কৃতজ্ঞতা স্বীকার এবং
৪. সূচিপত্র।
খ. মূল বিষয়াবলি: এ অংশে যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচিত হয় সেগুলো হল-
১. ভূমিকা:
i. গবেষণার সমস্যা বা বিষয়বস্তু।
ii. গবেষণার উদ্দেশ্যাবলি এবং
iii. গবেষণার প্রকল্প বা অনুমান।
২. গবেষণা পদ্ধতি।
i. নমুনা।
ii. উপাত্ত সংগ্রহের উপকরণ ও যন্ত্রপাতি এবং
iii. গবেষণার নকশা ও প্রক্রিয়া।
৩. ফলাফল।
৪. আলোচনা ও সুপারিশ এবং
৫. সারাংশ।
গ. সহায়ক বিষয়াবলি বা নির্দেশিকা। এর অন্তর্ভুক্ত বিষয়সমূহ হল-
১. প্রাসঙ্গিক গ্রন্থপঞ্জি ও
২. পরিশিষ্ট।
উপসংহার: অবশেষে বলা যায়, কোন গবেষণার বিষয়বস্তু, পদ্ধতি, প্রক্রিয়া, ফলাফল ও এর তাৎপর্য অন্যরা জানতে এবং বুঝতে পারেন গবেষণার প্রতিবেদনের মাধ্যমে। অতএব, জ্ঞান বিতরণের ক্ষেত্রে একটি ভাল প্রতিবেদনের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই উত্তমরূপে প্রতিবেদন লেখার জন্য প্রয়োজনীয় রীতিনীতি ও কলাকৌশলগুলো শিক্ষার্থীদের জানা উচিত।