আন্তরদলীয় নক্শা বলতে কী বুঝ?

অথবা, আন্তরদলীয় নক্‌শায় সংজ্ঞা দাও।
অথবা, আন্তরদলীয় নক্সা কী?
অথবা, আন্তঃদলীয় নক্‌শা কী?
উত্তর।। ভূমিকা : সব ধরনের গবেষণার জন্য গবেষণামূলক নকশার প্রয়োজন অনস্বীকার্য। গবেষণার ধরন বৈশিষ্ট্যের উপর নক্শার ধরন ধারন নির্ভরশীল। আর সি কারণেই গবেষণগণ বিভিন্ন রকমের নক্শার প্রস্তাব করেছেন। এটি সার্থক গবেষণা পরিচালনা করতে হলে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সঠিক গবেষণা নকশার ব্যবহার প্রয়োজন। আর এই সঠিক নকশাটি নির্বাচন করতে হলে বিভিন্ন রকমের নক্শা সম্পর্কে জ্ঞান থাকা খুবই প্রয়োজন।
আন্তঃদলীয় নক্শা : আন্তঃদলীয় নক্শা একটি পরীক্ষণমূলক বা গবেষণামূলক নক্শা। এই ধরনের নক্শায় পরীক্ষণ পাত্র থাকবে একদল বা একজন। দুই বা দুইয়ের বেশি দলের দ্বারা পরীক্ষণে পরীক্ষণ দলের উপর নিরপেক্ষ চলের একাধিক মান ব্যবহার করে সাপেক্ষ চলের উপর তাদের প্রভাব পরিমাপ করা হয়। কিন্তু আন্তঃদলীয় নক্শায় একটি মাত্র দলের উপর নিরপেক্ষ চলের একাধিক মাত্রা প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। ফলে এসব মান অনুযায়ী নির্ভরশীল চলের উপর প্রভাবগুলো পরিমাপ করা হয়। এসব নির্ভরশীল চলের প্রভাবগুলোর মধ্যে বৈসাদৃশ্য বা পার্থক্য যাচাই ও তুলনা করা হয়। পরীক্ষণের মূলকথা হলো পার্থক্যসূচক প্রভাব যা পর্যবেক্ষণযোগ্য ও পরিমাপযোগ্য।
আন্তঃদলীয় নক্শায় এই দলের উপর একই অনির্ভরশীল চল বা নিরপেক্ষ চলের বিভিন্ন মাত্রা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই মাত্রা বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে এসব মাত্রার মান এক রকমই থাকে। এ নকশার বিভিন্ন মাত্রার অনির্ভরশীল চল প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে সময়গত বিরতি মেনে চলা হয়। এই বিরতির দৈর্ঘ্য কত হবে তা অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক্ষেত্রে বিরতি প্রদানের জন্য সমসয়গত অনুসূচি মেনে চলতে হয়। এই সময়গত অনসূচি বিভিন্ন স্বাধীন চলের ধরন ও তার মাত্রার উপর নির্ভর করে। স্বাধীন চল দুই বা তার চেয়ে বেশিও হতে পারে। এখানে একটি নিরপেক্ষ চলের কোন মাত্রার প্রভাবে যেন অন্য নিরপেক্ষ চল বা অন্য নিরপেক্ষ চলের মাত্রাটি প্রভাবিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এখানে প্রথমে নিরপেক্ষ চলটি প্রয়োগ করার পর সাপেক্ষ বা নির্ভরশীল চলের প্রভাব পরিমাপ করা হয়।এখানে খেয়াল রাখতে হবে যে, উপর্যুক্ত স্বাধীন চলের প্রভাবটি সম্পূর্ণভাবে বিলীন হয়েছে কি না বা, দ্বিতীয়বার স্বাধীন চল প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে প্রথমটির কোন প্রভাব কাজ করবে কি না তখনই কেবল দ্বিতীয় বার নিরপেক্ষ চলের মাত্রা ব্যবহার করা যাবে। উদাহরণস্বরূপ আমরা যদি একটি মাত্র দলের ক্ষেত্রে দেখতে পাই যে, “হাতের লেখার দ্রুততার উপর নেশার প্রভাব কতটা” সেক্ষেত্রে দুইভাবে নক্শা তৈরি করা যাবে। এ ধরনের নকশা নিম্নরূপ :
ছক ১ : হাতের লেখার দ্রুততার উপর নেশার প্রভাব কতটা ক্ষতিকর চল অপসারণ পদ্ধতি)

ছক ২ : হাতের লেখার দ্রুততার উপর নেশার প্রভাব কতটা (সময়গত অনুসূচি পদ্ধতি)

উপর্যুক্ত যে কোন নক্শা অনুযায়ী পরীক্ষণ চালিয়ে প্রাপ্ত সাফল্যাংকের পার্থক্যগুলোকে যোগ করে ED নিম্নোক্ত সূত্রের সাহায্যে প্রত্যাশিত ফলাফল পাওয়া যায়।
সূত্র, A = MD2/(ED) 2 (ছক-১)
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, আন্তঃদলীয় পরীক্ষণ পরিচালনা করার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা থাকলেও এর কিছু অসুবিধাও রয়েছে। কারণ এই নক্শাটি সকল ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায় না। এই নক্শা অনুযায়ী একটি স্বাধীন চল প্রয়োগ করার পর অপর একটি স্বাধীন চল ব্যবহার করার সময় তা ক্ষতিকর প্রভাবে দুষ্ট হতে পারে। সুতরাং এই সমস্ত ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়া প্রায় অসম্ভব।